বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে দুই দল কেন্দ্রিক দুঃশাসনের মিউজিক্যাল চেয়ার খেলার অবসান দরকার।’

আজ সোমবার সকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনে দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।

সিপিবির সভাপতি সেলিম বলেন, ‘দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতিতে শাসক শ্রেণির সাথে জনগণের দ্বন্দ্বই প্রধান। তাই শাসকদের এক দল আওয়ামী লীগের দুঃশাসন থেকে রক্ষা পেতে বিএনপির আশ্রয় নিলে জনগণের দুর্দশার অবসান ঘটবে না। এই দ্বি-দলীয় ধারার বাইরে বাম-গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তিকে রাষ্ট্রক্ষমতায় নেওয়ার মধ্য দিয়েই কেবল মাত্র বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণ সম্ভব।’

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম আরো বলেন, ‘আসন্ন নির্বাচনের ক্ষেত্রেও অন্তত আজকে আমরা জানিয়ে দিতে পারি, যে আমরা আগামী নির্বাচন বয়কটও করতে পারি, অংশগ্রহণও করতে পারি। তফসিল ঘোষণার আগেই সরকারকে পদত্যাগ করে সংসদ ভেঙে দিয়ে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তদারকি সরকার গঠন করতে হবে। বাম গণতান্ত্রিক জোট ও সিপিবি নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য চার দফা প্রস্তাবও দিয়েছে।’ দাবিগুলো না মানা হলে সিপিবি ও বাম গণতান্ত্রিক জোট নির্বাচন বর্জন করবে  বলেও এ সময় হুঁশিয়ারি জানান সিপিবির এই নেতা।

সিপিবির দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবিগুলো তুলে ধরা হয়। দাবিগুলো হলো-জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে, রাজনৈতিক দল ও সমাজের অপরাপর অংশের মানুষের মতামত নিয়ে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ তদারকি সরকার গঠন করতে হবে, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে বর্তমান জাতীয় সংসদ ভেঙে দিতে হবে এবং জনগণের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে পুনর্গঠন করতে হবে।

সংবাদবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘দ্বি-দলীয় ধারার অবসান না ঘটিয়ে দ্বি-দলীয় ধারা কেন্দ্রিক দুঃশাসন আরো পোক্ত করা হচ্ছে। এই দুটি মেরুর মাধ্যমে দুঃশাসনের এমন মিউজিকাল চেয়ার খেলার অবসান ঘটানো আজ অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। দুঃশাসনের অবসানের পাশাপাশি বিকল্প গড়ার সংগ্রাম তাই আজ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো আরো একটি একতরফা নির্বাচনের ক্ষেত্র প্রস্তুত করছে বর্তমান সরকার। যেনতেন ভাবে পুনর্নির্বাচিত হওয়ার জন্য ক্ষমতাসীন সরকার মরিয়া প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। জনসমর্থন না থাকায় নির্বাচনের নামে নির্লজ্জ প্রহসনের আশ্রয় নিচ্ছে।’

বর্তমানে সরকার বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যে অংশগ্রহণ না করার ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘গত ২২ সেপ্টেম্বর ঢাকার মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয় ঐক্য গড়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। সিপিবিসহ বাম-গণতান্ত্রিক জোটকে তারা এই সমাবেশে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ জানায়। বাম গণতান্ত্রিক জোট এই সমাবেশে জোটগতভাবে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নেয়।’