খালেদা জিয়ার জামিন নিয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় কারাগারে থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জামিন কেন বাতিল করা হবে না সে বিষয়ে তাঁর আইনজীবীদের কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী ৭ অক্টোবর খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া এ মামলার অপর দুই আসামি মনিরুল ইসলাম খান ও জিয়াউল ইসলাম মুন্নার করা বিচারকের প্রতি অনাস্থার আবেদন নামঞ্জুর করেন আদালত। স্থায়ী জামিনে থাকা মনিরুল ইসলামের জামিন বাতিল করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেওয়া হয়।
একইসঙ্গে খালেদা জিয়ার মামলা স্থগিত চেয়ে তার আইনজীবীরা হাইকোর্টে যে আবেদন করেছেন সে বিষয়ে উচ্চ আদালতের আদেশ ওই তারিখের মধ্যে জমা দিতেও নির্দেশ দিয়েছেন। আর এ কাজ করতে তাঁরা ব্যর্থ হলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রায়ের দিন ধার্যের যে আবেদন করেছেন সে বিষয়ে আদেশ দেওয়া হবে।
আজ রোববার রাজধানীর পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারের ভেতরে স্থাপিত নবগঠিত অস্থায়ী আদালতে ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ ড. মো. আখতারুজ্জামান এ আদেশ দেন।
অপরদিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া ও মাসুদ আহমেদ তালুকদার আদালতকে জানান, তাঁরা খালেদা জিয়ার মামলার ডিফেন্ড করছেন, প্রতিনিধিত্ব করছেন না। আদালত এ বিষয়েও আগামী ৭ অক্টোবর আইনি ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন।
এদিন দুপুর পৌনে ১২টায় মামলার কার্যক্রম শুরু হয়। খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া বলেন, ‘খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচার করার যে আদেশ আদালত দিয়েছেন সেই বিষয়ে আমরা উচ্চ আদালতে গেছি। হাইকোর্ট আগামীকাল খুলছে। এরপর আমরা সেই বিষয়ে শুনানি করব।’ সেজন্য একটি যুক্তিসঙ্গত সময় পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম মুলতবি রাখার আবেদন করেন তিনি।
আসামি মুন্নার আইনজীবী আমিনুল ইসলাম আদালতকে বলেন, ‘২০ সেপ্টেম্বর আদালত যে আদেশ দিয়েছেন তা যথার্থ হয়েছে কি না সেজন্য আমরা উচ্চ আদালতে গেছে। আদালতের সঙ্গে আমাদের বিরোধ নেই। আবেদন-নিবেদন করা একটি আইনি বিষয়। ওই আবেদনের সঙ্গে জামিন বাতিলের কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না। মনিরুল ইসলাম জামিনের অপব্যবহার করেননি।’ আমিনুল ইসলাম তাঁর মক্কেল জিয়াউল ইসলাম মুন্না জামিন আবেদন মঞ্জুর করার আবেদন করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা তাঁর পক্ষে প্রতিনিধিত্ব করে জামিনের আবেদন করেননি। সেজন্য খালেদা জিয়ার জামিন বর্ধিত করার সুযোগ নেই। তাঁর জামিন বাতিল করতে হবে। তিনি গত ৫ সেপ্টেম্বর আদালতে এসে বলেছেন, আমি বারবার আদালতে আসব না। সেজন্য তাঁর সম্মানের দিকে তাকিয়ে আমরা তাঁর অনুপস্থিতিতে বিচারকার্য চালানোর জন্য সরল উদ্দেশে আদালতে আবেদন করেছি।’
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় গত ১ ফেব্রুয়ারি আসামি জিয়াউল হক মুন্নার পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানি অব্যাহত রয়েছে এবং খালেদা জিয়ার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন বাকি আছে। ২০১১ সালের ৮ আগস্ট খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ মামলায় ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। মামলাটিতে বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরী এবং তাঁর তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান আসামি। মামলাটিতে খালেদা জিয়াসহ অপর আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ তৎকালীন বিচারক বাসুদেব রায় অভিযোগ গঠন করেন।