বিচারকের প্রতি দুই আসামির অনাস্থার আদেশ কাল
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় বিচারকের প্রতি দুই আসামির অনাস্থা দেওয়ার বিষয়ে আদেশ দেওয়ার জন্য আগামীকাল বুধবার দিন ধার্য করেছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার ঢাকার পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থাপিত অস্থায়ী পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক ড. আখতারুজ্জামান এ দিন ধার্য করেন।
গত সোমবার এ মামলার আসামি জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খানের পক্ষে তাঁদের আইনজীবীরা বিচারকের বিরুদ্ধে অনাস্থার আবেদন করেন। সে বিষয়ে আজ শুনানি হলে আগামীকাল আদেশ দেওয়ার জন্য রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া আজ খালেদা জিয়ার পক্ষে আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি ও যুক্তিতর্ক শুনানির জন্য সময়ের আবেদন করেন। সে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক শুনানিতে আইনজীবীদের বলেন, ‘আপনারা কি শুধু জামিন নেওয়ার জন্য আদালতে আসেন? শুধু শুধু বিচারকাজকে বিলম্ব করছেন।’
শুনানিতে আদালতে বিচারককে সম্মতি জানিয়ে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বিচারকাজে আদালতকে সহযোগিতা করছেন না। বরং ভেতরের-বাইরের ষড়যন্ত্র এক হয়ে গেছে। কেমন যেন গুমোট অবস্থা তৈরি হয়েছে।’
এ ছাড়া অনাস্থার বিষয়ে মোশাররফ হোসেন কাজল শুনানিতে বলেন, ‘কোনো প্রেক্ষাপট তৈরি হয়নি যে আসামিপক্ষ অনাস্থা দেবে। বাস্তবে তারা ষড়যন্ত্র করছেন। আদালত মামলার কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য নন, আচরণ তাঁদের স্ববিরোধী। উচ্চ আদালত থেকে কোনো আদেশ আসেনি। আদালত মামলার কার্যক্রম বন্ধ করতে বাধ্য নন।’
খালেদা জিয়ার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার শুনানিতে বলেন, ‘খালেদা জিয়া নিজে আদালতে এসে বলে গেছেন তিনি গুরুতর অসুস্থ। খালেদা জিয়া একা চলতে পারেন না। এক জায়গায় বেশিক্ষন বসে থাকতে পারেন না। বাথরুমে পড়ে গেছেন। তাঁর চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া কারা মহাপরিদর্শক জানিয়েছেন দু–একদিনের মধ্যে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থা হবে।’
মাসুদ তালুকদার আরো বলেন, ‘খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচার চলার আদেশের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ থেকে উচ্চ আদালতে যাওয়া হবে। তিনি সুস্থ হলে আদালতে আসবেন। সে পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হোক।’
এদিকে শুনানির সময় জিয়াউল ইসলাম মুন্নাকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০০৫ সালে কাকরাইলে সুরাইয়া খানমের কাছ থেকে ‘শহীদ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’-এর নামে ৪২ কাঠা জমি কেনা হয়। কিন্তু জমির দামের চেয়ে অতিরিক্ত এক কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা জমির মালিককে দেওয়া হয়েছে বলে কাগজপত্রে দেখানো হয়, যার কোনো বৈধ উৎস ট্রাস্ট দেখাতে পারেনি।
এদিকে, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে গত ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে কারাগারে আছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।