ভৈরবে ছিনতাইকারী হত্যা মামলার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার

Looks like you've blocked notifications!
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ছিনতাইকারী বাপ্পী হত্যা মামলার প্রধান আসামি আরেক ছিনতাইকারী জুটনকে গ্রেপ্তার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। ছবি : এনটিভি

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ছিনতাইকারী বাপ্পী (১৯) হত্যা মামলার প্রধান আসামি আরেক ছিনতাইকারী জুটনকে (২২) গ্রেপ্তার করেছে রেলওয়ে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে শহরের বঙ্গবন্ধু রোডের ভৈরবপুর দক্ষিণপাড়ার একটি বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঝুটন ছিনতাইয়ের ঘটনাসহ বাপ্পীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। পরে তাঁকে বিকেলে কিশোরগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়।

পুলিশ জানায়, গত ১৩ আগস্ট বিকেলে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ভৈরব রেলওয়ে সেতু এলাকায় বেড়াতে আসে উপজেলার শিবপুর ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের জিল্লুর রহমানের ছেলে আরিফুর রহমান, তার ছোট বোন আফরিন, প্রতিবেশী গোলাপ মিয়ার মেয়ে তানজিলা এবং জ্ঞাতি ভাই ছনছাড়া গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে সাগর (২০)। বেড়ানোর একপর্যায়ে বিকেল ৪টার দিকে তারা রেলওয়ে সেতু এলাকায় রেললাইনের পাশ দিয়ে হাঁটার সময় কয়েকজন ছিনতাইকারী তাঁদের ছুরিকাঘাত ও মারধর করে সঙ্গে থাকা তিনটি দামি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন, একটি সোনার চেইন ও এক হাজার ২০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়।

তাঁদের সব কিছু ছিনিয়ে নেওয়ার পর ছিনতাইকৃত সোনার চেইন ও দামি মোবাইল ফোনসেট কে নেবে-এই নিয়ে ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যদের মধ্যে ঝগড়া শুরু হয়। এ সময় বাপ্পী চেইনটি জোর করে নিতে চাইলে অপর ছিনতাইকারীরা তাঁর গলায় ছুরিকাঘাত করে মালামাল নিয়ে পালিয়ে যায়।

পরে শিক্ষার্থীদের চিৎকার চেচামেচিতে স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ বাপ্পীর দেহ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ছিনতাইকালে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাত ও কিল-ঘুষিতে আরিফুর রহমান, তার ছোট বোন আফরিন বেগম, প্রতিবেশী তানজিনা ও সাগর আহত হন। আহতদের মধ্যে আরিফুর রহমানকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। আফরিন ও তানজিনা ভৈরবের জামালপুর টেকনিক্যাল স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আর সাগর ভৈরব হাজী আসমত কলেজের স্নাতক (সম্মান) তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী বলে জানান তাঁরা।

খবর পেয়ে নিহত বাপ্পীর বাবা শহরের আমলাপাড়া এলাকার মোবারক মিয়া এসে ছেলের লাশ শনাক্ত করেন। পরে এই ঘটনায় মোবারক মিয়া বাদী হয়ে ছিনতাইকারী জুটনকে প্রধান আসামি করে অপর চারজনের বিরুদ্ধে ভৈরব রেলওয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

ভৈরব রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মজিদ জানান, গ্রেপ্তার হওয়া জুটন এলাকার চিহ্নিত ছিনতাইকারী। তাঁর বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় একাধিক অপরাধের মামলা রয়েছে। তিনি তাঁর সহযোগী ছিনতাইকারী বাপ্পীকে খুনের কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে আরো পাঁচ-ছয়জন জড়িত ছিল বলে তিনি পুলিশকে জানিয়েছেন। এক মাস চেষ্টার পর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় বলে জানান তিনি।