দ্বিতীয় স্ত্রী হত্যায় সেলিম মণ্ডলের স্বীকারোক্তি
ঢাকা জেলা পরিষদের সদস্য ও সাভার থানা যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি সেলিম মণ্ডল তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ বুধবার মানিকগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নিভানা খায়ের জেসির আদালতে সেলিম মণ্ডল জবানবন্দি দেন।
পরে বিকেলে মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
রিফাত রহমান জানান, পারিবারিক কোন্দলের জের ধরে সেলিম মণ্ডল গত ২ আগস্ট তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী আয়েশা আক্তার বকুলকে পিটিয়ে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর সহযোগীদের নিয়ে লাশ সাভার থেকে নিজের গাড়িতে তোলেন। এরপর মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বায়রা ইউনিয়নের স্বরুপপুর গ্রামে নিয়ে যান। পরে সেখানে ফেলে লাশের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন তাঁরা। এ সময় তাঁর সঙ্গে আরো বেশ কয়েকজন ছিল।
৩ আগস্ট স্বরুপপুর গ্রাম থেকে আগুনে ৯০ শতাংশ ঝলসানো এক নারীর লাশ উদ্ধার করে সিংগাইর থানা পুলিশ। পুলিশ অজ্ঞাত পরিচয় হিসেবে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে পাঠায়। ময়নাতদন্ত শেষে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে লাশটি মানিকগঞ্জ পৌরসভা কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এদিকে, সিংগাইর থানা পুলিশ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পরে মরদেহের ছবি দেখে স্বজনরা আয়েশা আক্তার বকুলকে শনাক্ত করে।
নিহতের বড় ভাই উজ্জ্বল হোসেন গত ২০ আগস্ট সেলিম মণ্ডলকে প্রধান আসামি করে সিংগাইর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। সেলিম বেশ কিছুদিন পালিয়ে থেকে ২৮ আগস্ট উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তাঁকে অস্থায়ী জামিন দেন।
অস্থায়ী জামিনে থাকার সময় সেলিম মণ্ডল ৫ সেপ্টেম্বর রাতে দেশ থেকে পালিয়ে ইতালি যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন পুলিশ তাঁকে আটক করে সিংগাইর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
পরে গত ৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে সেলিম মণ্ডলকে আদালতে হাজির করে। আদালত তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে আবারও আবেদন করে পুলিশ। রিমান্ড শেষ হওয়ার আগেই আজ বুধবার সেলিম মণ্ডল আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।