ডাকসু নির্বাচন না দেওয়ায় উপাচার্যের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা

Looks like you've blocked notifications!
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আক্তারুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ ড. কামাল উদ্দিন ও প্রক্টর ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানি (বাঁ থেকে)। ছবি : সংগৃহীত

হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আক্তারুজ্জামানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হয়েছে। অন্য দুজন হলেন কোষাধ্যক্ষ ড. কামাল উদ্দিন ও প্রক্টর ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানি।

আজ বুধবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আইনজীবী মনজিল মোরসেদ এই মামলা দায়ের করেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের জানান, আগামী রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হতে পারে।

গত ৪ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আক্তারুজ্জামানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিশ পাঠানো হয়।

নোটিশে বলা হয়, আগামী সাতদিনের মধ্যে আদালতের নির্দেশনা অনুসারে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে উক্ত তিনজনের বিরুদ্ধে হাইকার্টে আদালত অবমাননার মামলা করা হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করা হয়েছে বলে জানান আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি ডাকসু নির্বাচন ছয় মাসের মধ্যে সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ আদেশ বাস্তবায়নের জন্য বলা হয়। এ ছাড়া ডাকসু নির্বাচনের সময় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন আদালত। বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মো. আতাউর রহমান খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

ডাকসু নির্বাচনে পদক্ষেপ নিতে ৩১ শিক্ষার্থীর পক্ষে ২০১২ সালের ১১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ ও প্রক্টরকে লিগ্যাল নোটিশ দেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই নোটিশের কোনো জবাব না দেওয়ায় ওই বছরই ২৫ শিক্ষার্থীর পক্ষে রিট আবেদন করা হয়।

এরপর ৮ এপ্রিল হাইকোর্ট নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ডাকসু নির্বাচন করার ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। বিবাদী ছিলেন শিক্ষা সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, রেজিস্ট্রার ও প্রক্টর।

রিটকারীরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ছাত্র আলী আসিফ সাওন, নাদিম মাহমুদ, এহসানুল হাসান, ফাহিম হোসেন মজনু, আলম ভূইয়া, আশিকুর রহমান, রিয়াদুল ইসলাম, শোয়েব রানা, রিয়াজউদ্দৌলা প্রধান, মো. রুহুল আমিন, সৌমিত্র দাস শুভ্র, আবদুল্লাহ আল হোসেন, আবদুর রহিম, ফরিদুল ইসলাম, এনামুল হক, সাইদুর রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান, রিয়াজুল করিম, রাসেল কবির, আবু মুসা, নাসির উদ্দিন, হুমায়ূন কবির, সবিত ইবনে আনিস, আমির খসরু ও রায়হান রাজু।

রিট আবেদনে বলা হয়, ১৯৯৮ সালের ২৭ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য অধ্যাপক এ কে আজাদ চৌধুরীর সভাপতিত্বে এক সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, ডাকসু নির্বাচনের পর এর সময়সীমা হবে এক বছর। পরে তিন মাস নির্বাচন না হলে বিদ্যমান কমিটি কাজ চালিয়ে যেতে পারবে। এ সিদ্ধান্তের পর আগের ডাকসু ভেঙে দেওয়া হয়।  ১৯৯০ সালের ৬ জুলাই ডাকসুর সর্বশেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।