অনশনকে ঘিরে বিএনপির ১৫০ নেতাকর্মী আটক : রিজভী

Looks like you've blocked notifications!
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বক্তব্য দেন। ছবি : এনটিভি

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা ও তাঁর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে পূর্বঘোষিত অনশন কর্মসূচিকে ঘিরে সারা দেশে বিএনপির অন্তত ১৫০ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। আজ বুধবার বিকেলে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ করেছেন। এর মধ্যে রাজধানীর কর্মসূচি থেকে দলের ১০৭ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

রিজভী বলেন, আজ আমাদের প্রিয় নেত্রীর মুক্তির দাবিতে শান্তিপূর্ণ অনশন কর্মসূচির জন্য ডিএমপি অনুমতি দিলেও তারা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আসা-যাওয়ার পথে গতিরোধ করে এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ১০৭ জনকে আটক করেছে। এ ছাড়া ঢাকার বাইরেও ৪৪ জনকে আটকের তথ্য আমরা পেয়েছি।

পূর্বঘোষিত প্রতীকী অনশন কর্মসূচি শেষে নেতাকর্মীদের আটক ইস্যুতে আজ বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন রিজভী।

রুহুল কবীর রিজভী বলেন, আজ কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচি ‘প্রতীকী অনশন’কে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়েছে। পুলিশ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে এবং তাদের নির্বিচারে আটক করেছে।

বিরোধীদলকে দলনের এক নতুন ফন্দি অবলম্বন করেছে পুলিশ- এমন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, বিএনপির কর্মসূচির মৌখিক অনুমতি দেওয়ার পরও শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির ওপর পুলিশকে লেলিয়ে দিয়ে নেতাকর্মীদের আটকের এক নতুন স্ট্র্যাটেজি অবলম্বন করেছে সরকার। অর্থাৎ অনুমতির কথা শুনে নেতাকর্মীরা নির্দিষ্ট সময়ে কর্মসূচির জন্য এক জায়গায় জড়ো হবে, আর সেই সুযোগে পুলিশ অনায়াসেই তাদের ধরতে পারবে। এটি আসলে বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরতে পুলিশের একটি নতুন ফাঁদ।

বিএনপির এই নেতা বলেন, দখল ও সন্ত্রাসের ভাবধারায় অনুপ্রাণিত সরকার আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে সারা দেশ জনশূন্য করার জন্যই পুলিশকে অবাধ কর্মকাণ্ডের সনদ দিয়েছে। আজকের ঘটনায় এটাই প্রতীয়মান হয় যে, সরকার দমননীতির উত্থান প্রবল থেকে প্রবলতর করছে। আওয়ামী লীগের ঐতিহাসিক চরিত্রই হচ্ছে হানাদারী আচরণে জনঅধিকার কেড়ে নেওয়া। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আইনের বাহিনী না বানিয়ে সবচেয়ে নিম্নমানের দাসত্বের তকমা ঝুলিয়ে দিয়েছে সরকার। পুলিশি গ্রেপ্তারের এই অবাধ কর্মকাণ্ডে জনগণের মধ্যকার পুঞ্জীভূত নীরব ক্ষোভ প্রশমিত হবে না, বরং তা আগ্নেয়গিরির মতো উদগীরণ হবে।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজকেও বেপরোয়া পুলিশি আটক অভিযান গণতন্ত্রের জন্য এক মহাবিপদ সংকেত। বাকস্বাধীনতা হরণ করতে সরকারের আগ্রাসী মনোভাব এখন চরম পর্যায়ে। অবৈধ সরকার দেশকে অতি দ্রুত গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

রিজভী বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের জন্য মহালজ্জার দৃষ্টান্ত তৈরি হবে। তারা চরম সংখ্যালঘুতে পরিণত হবে। আওয়ামী সরকার এখন প্রান্ত বেলায়, খাদের কিনারে পতনের শঙ্কায়। সেজন্য তারা শেষ ভরসা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর। কিন্তু এই ভরসাই তাদের জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে। ক্ষমতার কানেকশন বিচ্ছিন্ন হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে এই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের সঙ্গে থাকবে না।

বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীরা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে সরকারি বাহিনীর অন্যায় আচরণ মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। সব বাধা অতিক্রম করে সামনের আন্দোলনে গণতান্ত্রিক শক্তি জীবনবাজি রেখে অংশগ্রহণ করবে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, খন্দকার মাসুকুর রহমান, যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর হাওলাদার ও এস এম জাহিদুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।