সিএমএম আদালতে লিফটের বেহাল দশা

Looks like you've blocked notifications!
চালু হওয়ার দুই বছরের মাথায় বেহাল দশা ঢাকা সিএমএম আদালত ভবনের লিফটের। দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ছবি : এনটিভি

ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতে একসঙ্গে ২১ জনের ধারণ ক্ষমতার নতুন লিফট উদ্বোধন করার দুই বছরের মধ্যে বেহাল দশায় পরিণত হয়েছে। এখন ওই লিফটে ১৫ জনের বেশি উঠলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। অথচ ঝুঁকিপূর্ণ লিফটিতে কোনো ধরনের অপারেটর নেই।

মঙ্গলবার সিএমএম আদালতের চার নম্বর কার্গো লিফটের সামনে দেখা গেছে বিজ্ঞপ্তি লাগানো। সেখানে লেখা আছে, ‘এ লিফটের ধারণ ক্ষমতা ১৫ জন, অতিরিক্ত যাত্রী উঠিলে কোনো দুর্ঘটনা ঘটিলে কোম্পানি বা কর্তৃপক্ষ দায়ী নয়।’

২০১৬ সালের ২৯ মার্চ আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক লিফটি উদ্বোধন করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, ঢাকা জেলা ও দায়েরা জজ এস এম কুদ্দুস জামান, ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম শেখ হাফিজুর রহমান, আইন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (প্রশাসন) বিকাশ কুমার সাহাসহ বিভিন্ন আদালতের বিচারক ও সিনিয়র আইনজীবীরা।

এমন ধরনের বিজ্ঞপ্তিকে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা হাস্যকর মনে করছে। কেননা আদালতে আসা বেশিরভাগ বিচারপ্রার্থী দরিদ্র। লিফট সম্পর্কে তাদের জ্ঞান কম। প্রত্যেকে লিফটে ওঠার সময় এই বিজ্ঞপ্তি নাও দেখতে পারে।

আইনজীবী বেলাল হোসেন বলেন, ‘সিএমএম আদালতের সব লিফটের বেহাল দশা। লিফটের যা ক্ষমতা তার চেয়ে অর্ধেক মানুষও বহন করতে পারে না। আর এতে লিফটের জন্য অপেক্ষায় থাকা মানুষের লাইন বড় হয়।’

বেলাল হোসেন আরো বলেন, ‘ঢাকার সিএমএম আদালতে সকাল থেকে হাজারো মানুষের হাজিরা থাকে। আইনজীবী, সংবাদকর্মী, পুলিশ, কয়েদিসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ যাতায়াত করে এ লিফট দিয়ে। অথচ এখানে নিম্নমানের লিফট বসানো হয়েছে।’

সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী বলেন, ‘লিফটটি উদ্বোধনের কিছুদিন পরই ওপরে উঠার সময় লিফটিতে আটকা পড়ি। তখনই বুঝেছিলাম লিফটির বেহাল দশা হবে। এখন ২১ জনের জায়গায় ১৫ জন যেতে পারবে, তাও দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা আছে। এটা দুঃখনক।’

রাবেয়া নামের এক নারী বলেন, ‘লিফটগুলা মনে হয় চায়নার। নইলে হেদিন দেখলাম লাগাইছে, আজ আবার দুর্ঘটনা ঘটবে বলে জানানো হইতাছে। তাও আবার লিফট চালানোর কোনো লোক নেই।’ রাবেয়া বলেন, ‘যেখানে মানুষের বিচার হয় সেখানে দুই নম্বরি লিফট!’

প্রতিদিনই আইনজীবীসহ অসংখ্য সাধারণ মানুষকে দশতলা এই ভবনে ওঠা-নামা করতে হয়। টি লিফট থাকলেও এতে ছয়জন করে ১২ জন চলাচল করতে পারেন। এতে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে হয়, অথবা লেগে যায় লম্বা লাইন।

এই সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রী ঢাকা বারের একটি অনুষ্ঠানে বড় লিফট স্থাপনের ঘোষণা দেন। যার পরিপ্রেক্ষিতে সুবিশাল নতুন এই লিফট চালু করা হয়।

এ বিষয়ে ঢাকার সিএমএম আদালতের ভারপ্রাপ্ত নাজির আনোয়ার হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, লিফটের বিষয়ে মাত্র আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। তাহলে আমরা লিফটের সামনে বড় করে নোটিশ লাগিয়ে দেব যেন ১৫ জনের বেশি লোক না ওঠে।

আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি এ বিষয়ে এখনি সিএমএম স্যারকে জানাচ্ছি। আর লিফটের বিষয়টি বাইরে থেকে তদারকি করা হয়। এটা সিএমএম আদালত নিয়ন্ত্রণ করে না। আমরা চেষ্টা করছি, কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে  দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য।’