‘তুই’ বলায় কিশোর খুন, গ্রেপ্তার আট কিশোর
রাজধানীর দক্ষিণ খান এলাকায় দুই গ্রুপ কিশোরের মধ্যে আধিপত্য-বিস্তারের দ্বন্দ্বেই খুন হয় মেহেদী হাসান শুভ নামের এক কিশোর। স্থানীয় আরাফাত ও শান্ত গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্বে ‘তুই’ বলে ডাকায় শুভকে খুন করা হয়।
গত ৩১ আগস্ট ছুরিকাঘাতে নিহত হয় শুভ (১৭)। এই খুনের ঘটনায় প্রধান খুনি ও সহযোগীসহ আট কিশোরকে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। আজ রোববার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান।
এ ঘটনায় আটকরা হচ্ছে, সাইফ, মনির, আরাফাত, সাইফুল, মেহেরাব, আপেল, সিফাত ও সোহেলকে। এরা প্রত্যেকেই উত্তরার দক্ষিণ খান এলাকার বাসিন্দা।
ডিএমপির উপকমিশনার মাসুদুর রহমান বলেন, ‘দক্ষিণখানে দুটি কিশোর গ্রুপ দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়ভাবে কাজ করছিল। একটি আরাফাত গ্রুপ, অন্যটি শান্ত গ্রুপ। নিহত কিশোর মেহেদী হাসান শান্ত গ্রুপের সদস্য ছিল। ওই দুই গ্রুপের নিজেদের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছিল। এ কারণে তারা একটা হত্যাকাণ্ডের পূর্ব পরিকল্পনা করে।’
মাসুদুর রহমান বলেন, ‘শুভ নিহত হওয়ার ১০-১৫ দিন আগে আরাফাত গ্রুপের সদস্য কাউসার ওরফে কডা শান্ত গ্রুপের সদস্য হুন্ডা মেহেদীকে তুই বলে সম্বোধন করে। এই তুই বলাকে কেন্দ্র করে শান্ত গ্রুপের সদস্য হুন্ডা মেহেদী ও নিহত শুভ, আরাফাত গ্রুপের অপর এক সদস্য সাইফকে মারধর করে। এ কারণে পূর্বপরিকল্পিতভাবে গত ৩১ আগস্ট স্থানীয় সংসদ সদস্যের একটি পথসভার মিছিল নিয়ে আসে শান্ত গ্রুপের ভিকটিম মেহেদী, নাজমুলসহ অনেকে। সেখানে শতাধিত মানুষের সামনে তাদের ওপর হামলা করে আরাফাত গ্রুপের সদস্যরা। এ সময় মেহেদীর বাম হাতে ও বুকের বাম পাশে সুইচ গিয়ার ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়।’
পুলিশের উপকমিশনার আরো বলেন, ‘ঘটনাস্থলের সিসি ফুটেজ দেখে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আটজনকে সিলেট ও দিনাজপুর থেকে গ্রেপ্তার করে ডিবি, ঢাকা মহানগর উত্তর। হত্যাকাণ্ডে যে ছুরি ব্যবহার করা হয় সেটাও উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। সেই সঙ্গে কিশোর গ্রুপ যাতে সক্রিয় হতে না পারে, সন্ধ্যার পর যাতে কেউ দলবদ্ধভাবে একত্রিত হতে না পারে সেজন্য মনিটরিং বাড়ানো হয়েছে।’
ব্রিফিং শেষে ডিবি পুলিশের (উত্তর) উপকমিশনার (ডিসি) মশিউর রহমান বলেন, ‘আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হবে আদালতে। সেই সঙ্গে এ দুই গ্রুপের নেতৃত্বে রয়েছে এলাকার দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি। যারা নিজেদের আধিপত্য বিস্তারে তাদের কাজে লাগাত। এখন আমরা তাদেরও আইনের আওতায় আনতে সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’ খুব শিগগিরই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে বলেও জানান তিনি।