খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে সরকার : আইনজীবী
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেছেন, সুচিকিৎসা দেওয়ার পরিবর্তে সরকার বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। কারাগারের ভেতরে নাটক-সিনেমায় যে রকম দেখানো হয়, সেই আকৃতির একটি আদালত কক্ষ বসানো হয়েছে। যেটা একটি গুহার মতো, স্যাঁতসেঁতে। সেখানে স্বাভাবিক শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সুযোগ নেই।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলার বিচারের জন্য পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্থায়ী আদালত স্থাপন করা নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন খালেদা জিয়ার এই আইনজীবী।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার বর্ণনা দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি বলেন, ‘খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তাঁর একটি হাত ও একটি পা কোনো কাজ করে না এবং প্রায় অবশ অবস্থায় তিনি দিন পার করছেন। তিনি আর্থ্রাইটিস রোগে আক্রান্ত। কিছুদিন আগে তিনি জেলখানায় মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলেন। বারবার তাঁকে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়ার দাবি জানালেও সরকার তাতে কর্ণপাত করেনি।’
জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে কারা অভ্যন্তরে ক্যামেরা ট্রায়ালের মাধ্যমে বেআইনিভাবে সাজা প্রদানের লক্ষ্যে একটি অস্থায়ী আদালত গঠন করা হয়েছে। যাতে সাধারণ জনগণ বিচারের নামে সরকারের বেআইনি কার্যক্রম দেখতে বা বুঝতে সক্ষম না হয়।’ কারাগারের যে কক্ষটিকে আদালত হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে, তা বাংলাদেশ সংবিধানের আর্টিক্যাল ৩৫(৩) এবং ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৫২ ধারা অনুযায়ী কোনো উন্মুক্ত আদালত নয় বা হতে পারে না।
‘সেখানে পাবলিক তো দূরের কথা, খালেদা জিয়া ও অন্য আসামিদের নিয়োজিত আইনজীবী কিংবা আত্মীয়স্বজন প্রবেশ এবং আদালতের কার্যক্রম দেখা বা শোনার কোনো সুযোগ নাই,’ মন্তব্য করেন এই আইনজীবী।
লিখিত বক্তব্যে জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সংবিধানের আর্টিক্যাল ৩৫(৩) এবং ফৌজদারি কার্যবিধি ৩৫২ ধারা অনুযায়ী আদালত বলতে একটি উন্মুক্ত আদালতের কথা বলা হয়েছে, যেখানে যেকোনো পাবলিকের সাধারণভাবে প্রবেশাধিকার থাকে। কিন্তু আপনারা জানেন, সেখানে পাবলিক তো দূরের কথা, খালেদা জিয়া ও অন্য আসামিদের নিয়োজিত আইনজীবী কিংবা আত্মীয়স্বজন প্রবেশের সুযোগ নেই।’
কারা অভ্যন্তরে গঠিত আদালতটি মোটেই উন্মুক্ত আদালত না হওয়ায় এবং সেখানে পাবলিক ট্রায়াল হওয়ার কোনো সুযোগ না থাকায় এইরূপ বেআইনি আদালতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলার বিচার কার্যক্রম চলার আইনগত কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করেন তাঁর আইনজীবী।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে থাকা অন্য মামলার শুনানির জন্য কারাগারের ভেতরে আদালত বসানোর বিষয়ে প্রজ্ঞাপন প্রত্যাহার করে উন্মুক্ত স্থানে বিচারকার্য পরিচালনা করার দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সহসভাপতি গোলাম মোস্তফা ও গোলাম রহমান ভূঁইয়া, নিতাই রায় চৌধুরী, সানাউল্লাহ্ মিয়া, বদরুদ্দোজা বাদল, ওয়ালিউর রহমান, আমিরুল ইসলাম, গাজী কামরুল ইসলাম সজল, এ কে এম এহসানুর রহমান, আহসান উল্লাহ, মেহেদী হাসান প্রমুখ।