নারায়ণগঞ্জে শিশু সিয়াম হত্যায় তিনজনের যাবজ্জীবন
নারায়ণগঞ্জে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শিশু সিয়াম হত্যার দায়ে তিন আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া মামলার বাকি তিন আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আনিসুর রহমান এই রায় ঘোষণা করেন।
কারাদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা হলেন মামলার প্রধান আসামি মেহেদী মণ্ডল, আসলাম মিয়া ও মো. হালিম। খালাস পাওয়া আসামিরা হলেন মেহেদীর বাবা ফারুক মণ্ডল, মা মেরীনা মণ্ডল ও বন্ধু বিপ্লব। এদের মধ্যে দণ্ডাদেশ পাওয়া আসলাম মিয়া ছাড়া বাকি পাঁচজন আজ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
তবে, এ রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিহত সিয়ামের বাবা হাজি মোস্তফা মাদবর। তিনি রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানান।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ফতুল্লার মাসদাইর এলাকার চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র শিশু সিয়ামের কবুতর পোষার শখ ছিল। পাশের বাড়ির যুবক মেহেদী মণ্ডল কবুতর দেওয়ার লোভ দেখিয়ে প্রায়ই তার কাছ থেকে টাকা নিতেন। কিন্তু টাকা নিয়েও কবুতর দিতেন না। শেষবার ব্যবসায়ী বাবার ক্যাশ বাক্স থেকে না জানিয়ে ২২ হাজার টাকা নিয়ে মেহেদীকে দেয় সিয়াম। এই ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর দুই পরিবারের মধ্যে ঝগড়া হয়।
এরপর ২০১৩ সালের ২২ নভেম্বর সন্ধ্যায় সিয়াম নিখোঁজ হয়। পরের দিন মুন্সীগঞ্জের শান্তিনগর মোল্লাকান্দি কবরস্থান থেকে সিয়ামের বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ক্ষতবিক্ষত ছিল তার লাশ।
পরে মেহেদী মণ্ডলকে একমাত্র আসামি করে ফতুল্লা থানায় মামলা করা হয়। তারপর দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ ছয়জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এ মামলায় আদালতে হাজির হয়ে ২২ জন সাক্ষ্য দেয়।
মামলার নথিতে আসামিরা জবানবন্দি দেন যে, ঘটনার সময় সিয়ামের হাত-পা দুজন টেনে ধরে, একজন মুখ চেপে রাখে এবং প্রধান আসামি মেহেদী উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে নৃশংসভাবে হত্যা করে সিয়ামকে।