পরীক্ষামূলক সম্প্রচারে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট
আনুষ্ঠানিকভাবে পরীক্ষামূলক সম্প্রচারের কাজ শুরু করেছে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। আজ মঙ্গলবার বিকেলে সাফ ফুটবলের প্রথম ম্যাচ সম্প্রচারের মাধ্যমে বহু কাঙ্ক্ষিত এই স্যাটেলাটের সফল সম্প্রচার দেখল বাংলাদেশ।
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হয় নেপাল ও পাকিস্তান।
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সফল সম্প্রচারের বিষয়ে জানতে চাইলে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এ অর্জন ও সাফল্য সমগ্র দেশবাসীর। আমাদের প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী স্যাটেলাইট ত্রুটিহীনভাবে কাজ করছে।
মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এই সাফল্য পেতে ১৯৭৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। কিন্তু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের প্রচেষ্টা শুরু হয় ১৯৯৭ সালে। আজ আমরা তার সাফল্য পেয়েছি। দীর্ঘ এ প্রচেষ্টার ফলে আজ বাংলাদেশ মহাকাশেও নিজেদের অবস্থান সফলভাবে জানান দিয়েছে।’
মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘সফল উৎক্ষেপণের পরে আমরা অপেক্ষায় ছিলাম সেটির কার্যক্রমের। আজ পরীক্ষামূলক সম্প্রচারের মাধ্যমে তার অবসান হলো। এ সাফল্যের ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশা করি।’
বাংলাদেশের প্রথম মহাকাশ যোগাযোগ উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১। এই উপগ্রহের পরীক্ষামূলক সম্প্রচারের জন্য বিএস-১-এর তদারকি সংস্থা বাংলাদেশ কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিসিএসসিএল) আগেই যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করে।
এর আগে রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসসকে বিসিএসসিএলের চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ আজ বলেছিলেন, তাঁরা বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট ১ ব্যবহার করে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ খেলা সম্প্রচারের জন্য প্রস্তুত। এটাকে তিনি বাণিজ্যিক কার্যক্রমের ‘প্রাক-পরীক্ষা’ হিসেবে অভিহিত করেন। বলেন, এই টুর্নামেন্টের সম্প্রচার স্বত্ব পাওয়া একটি বেসরকারি স্যাটেলাইট স্টেশনে সম্প্রচারের পর আমরা তা বিটিভিতে প্রচার করব।
মহাকাশে পাঠানো দেশের প্রথম স্যাটেলাইটটির ওজন তিন দশমিক ৭ মেট্রিক টন। এটি মহাকাশে অবস্থান করবে ১৫ বছর। যা তৈরি করতে ব্যয় হয় দুই হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। মোট খরচে সরকারি অর্থ এক হাজার ৩১৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা এবং বিদেশি অর্থায়ন এক হাজার ৬৫২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। বাংলাদেশকে এই ঋণ দিয়েছে বহুজাতিক ব্যাংক এইচএসবিসি। নিজস্ব কক্ষপথ ১১৯.১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে এই স্যাটেলাইট স্থাপন করা হয়। স্যাটেলাইটটি উৎক্ষেপণের পর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগে প্রায় ২০ দিন।
স্যাটেলাইটটি পরিচালনার জন্য বঙ্গবন্ধু ১ এর গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে গাজীপুরের জয়দেবপুর ও রাঙামাটির বেতবুনিয়ায়। স্যাটেলাইট তৈরির পুরো কাজটি বাস্তবায়িত হয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) তত্ত্বাবধানে। গত ৩০ মার্চ স্যাটেলাইট তৈরির পর উৎক্ষেপণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডায় পাঠানো হয়। এর পর বাংলাদেশ সময় ১২ মে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি মহাকাশ অনুসন্ধান ও প্রযুক্তি কোম্পানি ‘স্পেসএক্স’ এর ফ্যালকন ৯ রকেট ফ্লোরিডার কেইপ কেনাভেরালের লঞ্চিং প্যাড থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটকে নিয়ে মহাকাশের পথে উড়াল দেয়।