‘তাড়াহুড়া করে ইভিএম চাপিয়ে দেওয়া যাবে না’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) পদ্ধতিতে নির্বাচন পৃথিবীর বহুদেশেই হয়। আমিই সব সময় ইভিএমের পক্ষে ছিলাম। আমি এখনো পক্ষে আছি। তবে হ্যাঁ এটা ঠিক তাড়াহুড়া করে এটাকে চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।
আজ রোববার গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা গত ৩০ ও ৩১ আগস্ট নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুতে বঙ্গোপসাগরীয় উপকূলের দেশগুলোর জোট বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কোঅপারেশনের (বিমসটেক) চতুর্থ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন। ওই সম্মেলন প্রসঙ্গে জানাতেই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
ইভিএম প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা (ইভিএম) একটা প্র্যাকটিসের ব্যাপার। এটা পরীক্ষামূলক করে দেখতে হবে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দেখেছেন বেশ কয়েকটা জায়গায় ইভিএমে নির্বাচন হয়েছে। সুবিধা হলো যে মানুষটা যাচ্ছে একটা টিপ দিয়ে ভোটটা দিয়ে আসছে আর সাথে সাথে রেজাল্টটা পেয়ে যাচ্ছে। ইলেকশনকে স্বচ্ছ আর জবাবদিহি করার জন্য আমরা আজ ট্রান্সপারেন্ট ব্যালট বক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা থেকে শুরু করে যা যা পরিবর্তন সবই কিন্তু আমরা করেছি।’
‘মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথা হয়েছে’
বিমসটেকের সম্মেলনে ছিলেন মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টও। রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সাধারণত যখন এ ধরনের কোনো আঞ্চলিক গোষ্ঠী তৈরি হয় তখন সেখানে খুব সঙ্গতকারণে কখনো দ্বিপক্ষীয় সমস্যা বা অন্যান্য রাজনৈতিক সমস্যার বিষয়গুলো এরমধ্যে কখনো অন্তর্ভুক্ত করা হয় না যাতে করে পরিবেশটা ভালো থাকে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেহেতু সম্মেলন চলাকালে কথা বলার সুযোগ হয়, কখনো অফিশিয়ালি কথা বলি, কখনো আনঅফিশিয়ালিও কথা বলি। সেক্ষেত্রে মিয়ানমারের যিনি প্রেসিডেন্ট, তিনি সেখানে ছিলেন, তাঁর সঙ্গে একপর্যায়ে আমার এ বিষয়ে আলোচনা হয়। তিনি স্বীকার করেন আমাদের সঙ্গে যে সমঝোতা স্বাক্ষর হয়েছে সে স্বাক্ষর অনুযায়ী ইতিমধ্যেই প্রায় তিন হাজারের তালিকা তাদের দেওয়া হয়েছে যারা ফিরে যেতে চায়। তারা বলেছেন যে তারা ফিরিয়ে নিয়ে যেতে প্রস্তুত। এ বিষয়ে নিয়ে ওইটুকু আলোচনা হয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগর অর্থাৎ এ অঞ্চলের যে দেশগুলো তাদের মধ্যে সমঝোতা, দেশগুলোতে একসঙ্গে করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন অর্থাৎ এ অঞ্চলের প্রতিটি দেশের মানুষের সার্বিক আর্থ সামাজিক উন্নয়নের ওপরই আমরা গুরুত্ব দিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কখনো চাই না প্রতিবেশী দেশের সাথে আমাদের কখনো সংঘাতপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হোক। প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা আমাদের দেশে আছে। আমরা এদের আশ্রয় দিয়েছি। সবরকম ব্যবস্থা আমরা করেছি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যথেষ্ট সমর্থন দিয়েছে আমাদের।’
শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘আমরা তাদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছি। চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। একটা ফরম তারা তৈরি করে দিয়েছে সেটাও ফিলআপ করা হয়েছে। সে মোতাবেক কিছু তালিকাও আছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে যখন কথা হয় তারা কখনো আপত্তি করে না। সব সময়ই তারা বলে এই আমরা নিয়ে যাব। কিন্তু এটা ঠিক বাস্তবতা, তারা বলে কিন্তু করে না। করতে গেলে কিছু বাধা আসে।’