শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা গ্রহণযোগ্য নয় : প্রধানমন্ত্রী
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিশৃঙ্খলা গ্রহণযোগ্য নয় মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবাইকে শৃঙ্খলা মেনে চলার তাগিদ দিয়েছেন। শিক্ষা খাতে খরচকে বিনিয়োগ হিসেবে উল্লেখ করে তিনি জানান, এ বিনিয়োগ দেশ গঠনে কাজে লাগবে।
আজ শনিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম রোকেয়া হলের ছাত্রীদের জন্য নবনির্মিত ‘৭ মার্চ ভবন’ উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম রোকেয়া হলে পৌঁছালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিরা তাঁকে স্বাগত জানান। সেখানে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ স্মরণে ‘৭ মার্চ ভবন’ নামে নিজ হলের নতুন একটি ভবন উদ্বোধন করেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী হিসেবে বেগম রোকেয়া হলে ছাত্রী শেখ হাসিনা আক্ষেপ নিয়ে নিজের শিক্ষা-জীবনের কথা স্মরণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা দুঃখ আছেন মনে, দুঃখটা সেটাই, আমার বাবাও তাঁর পড়াশোনা শেষ করতে পারেননি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। আর আমার ভাগ্যে জুটেছিল এটা যে, আমি যখন ১৯৭৫ সালে জার্মানিতে চলে যাই, (হত্যাকাণ্ডের) মাত্র ১৫ দিন আগে আমি দেশ ছেড়েছিলাম। এরপর আর ছয় বছর দেশে ফিরে আসতে পারি নাই। আমি মাস্টার্সে ভর্তি হয়েছিলাম। কিন্তু তা আর সমাপ্ত করতে পারি নাই। আমার সেই শিক্ষা অধরাই থেকে গেল। এই দুঃখটা আমার মনে সবসময় আছে, থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধু কেতাবি শিক্ষা নয়, মানুষের কল্যাণে আসে এমন প্রকৃত শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। তিনি জানান, উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করতে বাংলাদেশে অন্য দেশের তুলনায় খরচ অনেক কম লাগে। বিষয়টি মাথায় রেখে পানি, বিদ্যুৎ ব্যবহার এবং চারপাশে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার তাগিদ দেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শতভাগ খরচ কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে। এটা কিন্তু পৃথিবীর কোনো দেশে আছে বলে আমি জানি না। কারণ, আমরা আরো অনেক আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়ের খোঁজ-খবর তো রাখি। কিন্তু আমরা বাংলাদেশে সেটা করি। এর মর্যাদাটাও তাদের দিতে হবে। এবং উচ্ছৃঙ্খলতা কখনো গ্রহণযোগ্য না। সবাইকে একটা নিয়ম মেনে চলতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করতে হলে সেখানকার নিয়ম মেনে সেভাবেই আচরণ করতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ক্ষমতা তাঁর কাছে দায়িত্ব পালন। এ সময় ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধু হত্যার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধীদের পূর্ণবাসনেই এ জঘন্য হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়।
‘স্বাধীনতাবিরোধী, যারা যুদ্ধাপরাধী, যাদের বিচার চলছিল, যাদের রাজনীতি নিষিদ্ধ ছিল, ভোটের অধিকার নিষিদ্ধ ছিল, তাদের পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা। এটাই ছিল প্রকৃতপক্ষে হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত উদ্দেশ্য’, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।