সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার ঠিক হবে না
আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা ঠিক হবে না। এজন্য আমি নোট অব ডিসেন্ট দিয়ে কমিশন সভা ত্যাগ করেছিলাম বলে মন্তব্য করেছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মাহবুব তালুকদার।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার এই মন্তব্য করেন।
মাহবুব তালুকদার বলেন, নির্বাচন কমিশন ইভিএম আলোচনার প্রথম থেকেই বলে এসেছে সব রাজনৈতিক দল না চাইলে জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করা হবে না। আমি সংলাপের বইটি খুলে দেখলাম সেখানে অধিকাংশ দলই ইভিএমের বিরুদ্ধে। তাহলে আমাদের আগের বক্তব্য তো আমরা রাখতে পারছি না। এটা হচ্ছে আমার প্রথম পয়েন্ট। সেজন্য আমি মনে করি, ইভিএম ব্যবহারটা অন্তত আগামী জাতীয় নির্বাচনে ব্যবহার করা ঠিক হবে না।
এই কমিশনার আরো বলেন, আমার দ্বিতীয় পয়েন্ট, ইভিএম ব্যবহারের জন্য ইসি যাদেরকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে আমার নিজের বিবেচনায় সেই প্রশিক্ষণ অপর্যাপ্ত। জাতীয় নির্বাচনে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যাপারে আমি অত্যন্ত সন্ধিহান। কারণ প্রশিক্ষণ দিতে হলে যে সময়ের প্রয়োজন সেই পর্যাপ্ত সময় আমাদের হাতে নেই।
মাহবুব তালুকদার বলেন, আমার তৃতীয় পয়েন্ট হলো, ইভিএম ব্যবহারে ভোটারদের মধ্যে অনীহা রয়েছে। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দেখেছি অনেক ভোটার ইভিএমে ভোট দিতে চাচ্ছেন না। এটার কারণ হচ্ছে, ভোটারদেরকেও প্রশিক্ষণ দেওয়ার দরকার ছিল। তাদের একটা অভ্যাস গড়ে তোলার দরকার ছিল। আমাদের সময়কালের প্রথম থেকেই যদি আমরা মনে করতাম আমরা জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করব, তাহলে আমরা তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিতে পারতাম। এতদিনে আমরা একটা বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে প্রশিক্ষণ দিতে পারতাম।
ইসি মাহবুব আরো বলেন, আমরা একটি কর্মপরিকল্পনা দিয়েছিলাম সেটা আজকে আমি পড়ছিলাম। ওই কর্ম পরিকল্পনার কোথাও আমি ইভিএমের বিষয় দেখতে পেলাম না। হঠাৎ করে নির্বাচনের আগে আগে ইভিএমটা খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়াল।
ওই কমিশনার আরো বলেন, আমি কিন্তু এই যন্ত্রের অগ্রগতির সময়ে ইভিএম ব্যবহারের বিপক্ষে মোটেই নয়। কিন্তু আমি এটা মনে করি জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের যে প্রস্তুতি আমাদের প্রয়োজন সেই প্রস্তুতি আমাদের নেই। তবে যেভাবে গত বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে ইভিএম ব্যবহার করা হয়েছে এই ব্যবহার যদি আগামী দিনগুলোতে আরো বাড়ানো যায় ইভিএম ব্যবহারের একটা অভ্যাস আমাদের গড়ে উঠবে। আমি মনে করি আগামী পাঁচ বছর পরে কিংবা ১০ বছর পরে হোক ইভিএমটা আমাদের জাতীয় নির্বাচনে অনিবার্য হয়ে উঠবে।