ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছে মানুষ
প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন শেষে ঢাকায় ফিরতে শুরু করেছে কর্মজীবী মানুষ। গত শুক্রবার থেকে ফেরা শুরু হলেও, রোববার অফিস খোলা থাকায় সড়ক পথে মানুষের মূল স্রোত শুরু হয়েছে আজ থেকে।
সড়কপথে কিছুটা ভোগান্তির কথাও জানালেন বাসযাত্রীরা। এদিকে কমলাপুর রেলস্টেশনে গত দুদিনের তুলনায় আজ ঢাকা ফেরত যাত্রীদের ছিল উপচেপড়া ভিড়।
নানা ভোগান্তির মধ্য দিয়ে প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে ঢাকা থেকে গ্রামে গিয়েছিল এসব মানুষ। ঈদের ছুটি প্রিয়জনের সঙ্গে কাটাতে পেরে বেশ আনন্দিত তারা। মহাখালী বাস টার্মিনালে এক যাত্রী জানালেন যানজটের কথা। তিনি বলেন, ‘ফরিদপুর থেকে গোয়ালন্দ ঘাট পর্যন্ত জ্যাম।’
কয়েকটা দিন আনন্দে কাটানোর পর স্বজনদের ছেড়ে ঢাকায় ফিরতে মন না চাইলেও জীবিকার প্রয়োজনে ফিরতে হচ্ছে ঢাকাবাসীকে। কাউকে আবার ফিরতে হচ্ছে পড়াশোনার তাগিদেও। এক শিক্ষার্থী বললেন, ‘চলে আসছি। আজকে থেকেই ক্লাস শুরু। ১২টার সময় গিয়ে ক্লাস করা লাগবে।’
ঈদ করে বাবা ও মায়ের সঙ্গে ঢাকায় ফিরেছে এক শিশু। গ্রামের বাড়িতে আনন্দ করার কথা জানাল সে। ‘সাঁতার কেটেছি, গোসল করেছি, সবার সাথে মজা করেছি। এখন একটু একা একা লাগবে। কিন্তু পড়ার মাঝে থাকলে হয়তো ঠিক হয়ে যাবে।’
শুধু দেশের ভেতরেই নয়, অনেকে ঈদের ছুটি কাটাতে দেশের বাইরেও গিয়েছিলেন। সেখানে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঈদের ছুটি বেশ ভালোই কেটেছে তাঁদের। তবে ঢাকায় আসার পথে বাসের যান্ত্রিক ত্রুটি আর চালকের নিয়ন্ত্রণহীন চালনায় বেশ কষ্ট পেতে হয়েছে যাত্রীদের।
এক নারী যাত্রী বললেন, ‘শ্যামলী গাড়িটা খুবই খারাপ। এটা আমাদের যাওয়ার সময়ও ভোগাইছে। আসার সময়ও ভোগাইছে। কিন্তু ওইখানে আমরা খুবই এনজয় করেছি। দার্জিলিং, ভুটান সব জায়গা খুব ভালো লেগেছে।’
মহাখালী বাস টার্মিনালে এক লোক সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠছিলেন। তাঁর মাথায় ব্যান্ডেজ। তিনি জানালেন বাসচালকের বেপরোয়া চালনায় তিনি মাথায় আঘাত পেয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘এত বাজেভাবে ড্রাইভ করছে। আমি আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মাথার মধ্যে ছয়টা স্টিচ (সেলাই) দেওয়া লাগছে।’
একই বাসের আরেক যাত্রী বলেন, ‘এতটুকু পরিমাণ তার (বাসচালক) গিলটি ফিলিংস (অপরাধবোধ) নাই যে তাঁর কারণে একজনের মাথা ফেটে গেছে। সে কনটিনিউয়াসলি বলতেছে যে বৃষ্টি হচ্ছে, আবহাওয়া সুন্দর, আমি ঘুমায় গেছি। আমি কী করব?’
এ ব্যাপারে ওই বাসের চালক বললেন, ‘একটা গর্তের ভেতরে গাড়িটার একটু সমস্যা তো। ব্রেকে পা দিছি, গাড়ি বন্ধ হইয়া গেছে। তো হাইড্রলিক গাড়ি তো, বন্ধ হইয়া গেলে হার্ড হইয়া যায়। আমি ডাইনে নিছি, আমি আরো বাঁচাইছি, যাত্রী তো আর বুঝে না।’
এদিকে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে ছিল ঢাকা ফেরত মানুষের উপচেপড়া ভিড়। মূলত ট্রেনে ভ্রমণ তুলনামূলক আরামদায়ক ছিল, তাই এ পথকেই বেছে নিয়েছে অনেকে। কর্মব্যস্ততার কারণে যেসব শ্রমজীবী মানুষ ঈদে গ্রামের বাড়ি যেতে পারেনি, তাদের রোববারও ঢাকা ছাড়তে দেখা গেছে।