ঈদের দিন সড়কে ঝরল ১১ প্রাণ
ঈদুল আজহার দিন বগুড়া, কুষ্টিয়া ও সিরাজগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরো ১৫ জন।
আজ বুধবার সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে এসব দুর্ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে শুধু বগুড়াতেই দুটি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন পাঁচজন। এ ছাড়া কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় দুজন, দৌলতপুরে একজন, সিরাজগঞ্জের ঝাঐলে দুজন ও সলঙ্গায় একজন নিহত হয়েছেন।
তিন জেলা থেকে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন-
বগুড়া থেকে আতিকুর রহমান সোহাগ জানিয়েছেন, শেরপুর উপজেলায় আজ দুপুরে শেরপুর-ধনুট সংযোগ সড়কের বোয়ালকান্দি এলাকায় গাছের সঙ্গে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় দুই আরোহী এবং শাজাহানপুর উপজেলায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন।
শেরপুর থানার ওসি হুমায়ুন কবির জানান, কাজিপুর উপজেলার হাজরাহাটি গ্রাম থেকে একটি সুজুকি মোটরসাইকেলে করে শেরপুর আসছিলেন দুজন। এর মধ্যে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিলেন শামীম রেজা আর তাঁর পেছনে বসা ছিলেন সোহেল রানা। উপজেলার বোয়ালকান্দি এলাকায় চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খান। এ সময় শামীর ও সোহেল ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
‘প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মোটরসাইকেলটি স্বাভাবিক গতির চেয়ে বেশি মাত্রায় চলছিল। শামীম ব্যক্তিগতভাবে টেক্সটাইল প্রকৌশলী আর সোহেল রানা স্থপতি’, যোগ করেন ওসি।
অপরদিকে সকালে শাজাহানপুর উপজেলার মাঝিড়া বাজার এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই সিএনজির তিন যাত্রী নিহত হয় বলে জানায় পুলিশ।
কুষ্টিয়া থেকে সাবিনা ইয়াসমিন শ্যামলী জানান, সদর উপজেলায় ট্রাকের সঙ্গে মাহিন্দ্রা পরিবহনের সংঘর্ষে দুজন এবং দৌলতপুরে ট্রাকচাপায় এক শিশু নিহত হয়েছে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন জানান, আজ দুপুরে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের বটতৈল নামক স্থানে কুষ্টিয়াগামী একটি যাত্রীবাহী মাহিন্দ্রা পরিবহনের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা ট্রাকের সংঘর্ষ হয়।
এতে মাহিন্দ্রা পরিবহনের যাত্রীরা গুরুতর আহত হন। তাঁদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে দুজন মারা যান।
নিহত একজনের নাম শিপন মিয়া (২৮)। তাঁর বাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গায়। অন্যজনের নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।
এ দুর্ঘটনায় আহত চারজনকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
অন্যদিকে, একই সময়ে দৌলতপুর উপজেলার তারাগুনিয়া এলাকায় পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের সামনের রাস্তা পারাপার হওয়ার ট্রাকচাপায় সাহাবুল (১২) নামের এক শিশু ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
সিরাজগঞ্জ থেকে প্রতিনিধি এ বি এম ফজলুর রহমান জানান, আজ দুপুরে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ সড়কের ঝাঐল ওভারব্রিজ এলাকায় দুর্ঘটনায় দুই গরু ব্যবসায়ী এবং সকালে হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কের সলঙ্গা থানার চড়িয়া কামারপাড়া এলাকায় দুর্ঘটনায় আরো একজন মারা গেছেন।
নিহতদের মধ্যে একজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তিনি হলেন সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার বাতিয়ারপাড়া গ্রামের শমসের আলীর ছেলে মনসুর আলী (৪০)।
সিরাজগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক আবদুল হামিদ জানান, দুপুরে ঢাকা থেকে গরুর ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটি ট্রাক সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে যাচ্ছিল। ট্রাকটি ঝাঐল ওভারব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এতে ট্রাকটি মহাসড়কের ওপর উল্টে ঘটনাস্থলেই একজন নিহত ও পাঁচজন আহত হন।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্য ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে আরো এক গরুর ব্যবসায়ী নিহত হন।
অন্যদিকে, হাটিকুমরুল-বনপাড়া মহাসড়কে সলঙ্গার চড়িয়া কামারপাড়া এলাকায় ট্রাকের সঙ্গে একটি মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে মাইক্রোবাস চালকসহ ট্রাকের ছয় যাত্রী আহত হন।
আহতদের উদ্ধার করে হাটিকুমরুল গোলচত্বরে সাখাওয়াত মেমোরিয়াল হাসপাতালে নেওয়ার পথে এক গরুর ব্যবসায়ী নিহত হন।