রাজশাহীর স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নৃত্যুগুরু বাদল আর নেই
স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত রাজশাহীর নৃত্যগুরু বজলার রহমান বাদল আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আজ রোববার বিকেল ৪টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয়। তবে সন্ধ্যা ৬টার দিকে তার মৃত্যুর ঘোষণা দেয় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মোসাদ্দেক হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, রোববার বেলা ১১টার দিকে বজলার রহমান বাদলকে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়েছিল।
স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত নৃত্যগুরু বজলার রহমান বাদলের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন। রোববার সন্ধ্যায় এক শোক বার্তায় তিনি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বলেন, নৃত্যগুরু বজলার রহমান বাদলের মৃত্যুতে রাজশাহীসহ দেশবাসী গুণী ও প্রতিভাবান একজন নৃত্যশিল্পীকে হারালো। তাঁর মৃত্যুতে যে শূন্যতা সৃষ্টি হলো, তা অপূরণীয়। শোকবার্তায় মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান মেয়র।
এর আগে ১৭ আগস্ট রাতে গুরুতর অসুস্থ হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন নৃত্যগুরু বজলার রহমান বাদল। হাসপাতালে ভর্তি হলেও ওয়ার্ডে শয্যা না পেয়ে মেঝেতেই রাত কাটান তিনি। পরদিন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে খবরটি ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নজরে আসে সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের। তাঁর হস্তক্ষেপে হাসপাতালের ওয়ার্ডে ওইদিনই শয্যা পান নৃত্যগুরু বাদল। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গঠন করে মেডিকেল বোর্ডও।
এর আগে গত ১৪ আগস্ট অসুস্থ নৃত্যগুরু বাদলকে দেখতে তাঁর শিরোইলের বাসভবনে গিয়েছিলেন মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন।
জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে গত বছর স্বাধীনতা পদক পান ৯৫ বছর বয়সী নৃত্যশিল্পী বজলার রহমান বাদল। শিল্পকলা অ্যাকাডেমি পুরস্কার, নজরুল একাডেমি পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কারে তিনি ভূষিত হয়েছেন। পেয়েছেন ‘নৃত্যগুরু’ উপাধি। এছাড়া বহু সংবর্ধনা এবং সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।
বজলার রহমান বাদল ১৯২৩ সালের ১৮ অক্টোবর ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মালদহ জেলা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পূর্বপুরুষরা কলকাতার মানুষ ছিলেন। দাদা আশাক হোসেন আমের ব্যবসা করতে এসে মালদহে বাড়ি করেছিলেন। সেখানেই তাঁর জন্ম। বাবার নাম আবুল কাশেম। মায়ের নাম সখিনা বিবি।
১৯৪৫ সালে মালদহ জিলা স্কুল থেকে ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন বাদল। পরের বছর নাটক করতে রাজশাহী আসেন। আর ফেরা হয়নি। সেই থেকে তিনি রাজশাহীতেই আবাস গড়েছিলেন।