‘১ সেপ্টেম্বর থেকেই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই শুরু হবে’
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ১ সেপ্টেম্বর থেকেই বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই শুরু হবে। আর সেই লড়াই শেষ হবে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পরে।
আজ শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল আয়োজিত বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুদু এসব কথা বলেন।
মানববন্ধনে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, এখন আগস্ট মাস চলছে। এই আগস্ট মাসে দাঁড়িয়ে বলছি, আগামী মাস সেপ্টেম্বর মাস, বিএনপির প্রতিষ্ঠার মাস। বিএনপি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে ও জনগণের অধিকার রক্ষা করার জন্য। সেই সেপ্টেম্বর মাস সামনে। ১ সেপ্টেম্বর থেকেই বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াই শুরু হবে। আর সেই লড়াই শেষ হবে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট রাষ্ট্র ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পরে।
বিএনপি চেয়ারপারসনকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়ে দুদু বলেন, খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে দ্রুত মুক্তি দিন। অন্যথায় পাকিস্তানের সময় আপনার (শেখ হাসিনা) বাবা শেখ মুজিবকে যেভাবে কারাগার থেকে বের করা হয়েছিল, আমরাও সেই অবস্থা সৃষ্টি করব। সেই আন্দোলন আমরা মনে রেখেছি, প্রয়োজন হলে বাংলাদেশে পুনরায় সে রকম আন্দোলন করা হবে এবং সে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আপনাকে ক্ষমতাচ্যুত করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর দলের সাধারণ সম্পাদককে দিয়ে একেক সময় একেক কথা বলাচ্ছেন দাবি করে বিএনপির এই শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, ‘আপনি (প্রধানমন্ত্রী) আপনার দলের সাধারণ সম্পাদককে দিয়ে সকালে এক কথা, দুপুরে এক কথা, বিকেলে আরেক কথা বলতে বলছেন। আপনি বলেছেন, ১/১১ আপনার আন্দোলনের ফসল। আপনার দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলছেন, তিনি নাকি আবারও ১/১১ ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব আপনার নাকতো খুব পরিষ্কার, আপনি গন্ধ শুকতে থাকেন। আপনি (কাদের) কি অল্প কিছু দিনের মধ্যে খালেদা জিয়ার কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার গন্ধ পাচ্ছেন না? বেগম জিয়া আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে দেশের দায়িত্ব নেবেন এবং তারেক রহমান দেশে ফিরে আসবেন, আপনি কি সেই আলামত দেখতে পাচ্ছেন না?’
সাবেক এই ছাত্রনেতা বলেন, আপনি সরকারি দলের এমন একজন সাধারণ সম্পাদক আপনার এলাকার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক প্রধানমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদকে ঘর থেকে বের হতে দিচ্ছেন না, দুদিন ধরে পুলিশ দিয়ে তাঁর বাড়ির চারপাশে ঘিরে রেখেছে। আপনার সভানেত্রীর নির্দেশে আগস্ট মাসেই আপনি যেসব দৃষ্টান্ত দেখাচ্ছেন তা আমাদের হতবাক করেছে।
বিএনপি নেতা দুদু বলেন, আমরা খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই, তারেক রহমানের নামে মিথ্যা মামলা ও সাজা প্রত্যাহারসহ সব রাজবন্দির মুক্তি চাই। খালেদা জিয়া একমাত্র নেত্রী যিনি নির্বাচন করেছেন, প্রতিটি নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। কেউ কখনও তাঁকে পরাজিত করতে পারেনি।
শেখ হাসিনার সমালোচনা করে দুদু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আপনাকে জিজ্ঞাসা করি, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের প্রতি এত আক্রোশ কেন? আপনার এত ভয় কেন? খালেদা জিয়ার নামে মিথ্যা মামলা করেছেন, শুধু তাই না গত ১০ বছরে রাষ্ট্রীয় প্রচার মাধ্যমে এমন কোনো মিথ্যাচার নাই যা আপনি করেননি।’
কৃষক দলের সহ-সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান, কৃষক দলের সহ-সভাপতি নাজিম উদ্দীন মাস্টার, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দীন খান মিলন, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় নেতা মাইনুল ইসলাম, নাসির হাজারী, ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক আব্দুস ছাত্তার পাটোয়ারি প্রমুখ বক্তব্য দেন।