কিশোরগঞ্জ থেকে সারা দেশে ৬ ঘণ্টা বাস চলাচল বন্ধ
বাস চালককে মারধর করার প্রতিবাদে পরিবহন শ্রমিকরা আজ শনিবার সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ থেকে বাস চলাচল বন্ধ রাখেন।
এই সময়ে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের গাইটাল আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল থেকে রাজধানী ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রামসহ কোনো গন্তব্যে কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। এর ফলে ঈদের আগ মুহূর্তে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ যাত্রীরা। বাস না পেয়ে বাধ্য হয়ে যাত্রীরা বিকল্প উপায়ে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্রে জানা যায়, গত ৬ আগস্ট ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জ আসার পথে যাতায়াত পরিবহনের চালক মিজানুর রহমানকে কিশোরগঞ্জ সদরের মারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান হলুদ এবং তাঁর লোকজন মারধর করেন। এর প্রতিবাদে আজ সকাল থেকে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন পরিবহন শ্রমিকরা।
খবর পেয়ে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তারা গাইটাল বাস টার্মিনালে গিয়ে শ্রমিক নেতাদের নিয়ে বিষয়টি সুরাহার চেষ্টা করেন। পরে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় এ ঘটনায় মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিলে দুপুর ১২টার দিকে কর্মবিরতি প্রত্যাহার হলে বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়। এ সময় অন্যদের মধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তরফদার মো. আক্তার জামিল ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাসউদ উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বাদী বাসচালক মিজানুর রহমান জানান, চেয়ারম্যানের কথা মতো দ্রুত গতিতে বাস না চালানোয় মূল্যবান সময়ের অপচয় হয়েছে, এই অজুহাতে তাঁকে রড দিয়ে পিটানোসহ কিল-ঘুষি মেরে শারীরিকভাবে আহত করে। দায়ের করা মামলায় মজিবুর রহমান হলুদ ও তাঁর ছেলে নেপুসহ অজ্ঞাত পরিচয়ের আরো কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সহসভাপতি আবুল কালাম বলেন, প্রথমে থানা থেকে কোনো মামলা না নেওয়ায় ধর্মঘট ডাকা হয়। পরে মামলা নিলে ও সুষ্ঠু বিচারের আশ্বাস দিলে ধর্মঘট তুলে নেওয়া হয়। জড়িতদের অবিলম্বে আটকসহ বিচার না করা হলে পুনরায় বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হবে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমার কাছে এখনো মামলার কাগজ আসেনি। মামলার কাগজ পেলেই দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এর আগে চলতি বছরের ৮ এপ্রিল পরিবেশ আইন অমান্য করে পুকুর ভরাটের অভিযোগে ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান হলুদসহ নয়জনকে আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়।