কমলাপুরে ২০ লাখ টাকার ‘তুফান’
ঈদের আর মাত্র চারদিন বাকি থাকলেও রাজধানীতে এখনো জমেনি কোরবানির পশুর হাট। তবে বিভিন্ন হাটে ঢাকার বাইরে থেকে আসছে কোরবানিরপশু, বাড়ছে সরবরাহ। কমলাপুর বাজারের সবচেয়ে দামি গরুর নাম ‘তুফান’। দাম হাঁকা হয়েছে ২০ লাখ টাকা। তার সঙ্গে রয়েছে ‘টাইগার’। দাম হাঁকা হয়েছে ১৮ লাখ টাকা।
দুটি গরুর মালিক দিনাজপুরের ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান। পড়াশুনা করেন দিনাজপুর বীরগঞ্জে সরকারি কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষে। বাবার মৃত্যুর পর পরিবারের হাল ধরতে নরুজ্জামান পড়াশুনার পাশাপাশি নিজ বাড়িতে গরুর খামার শুরু করেন। তাঁর খামারে ২০টির মতো গুরু রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় গরুটি হলো ‘তুফান’। যা কমলাপুর গরু বাজারের এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ও দামি গরু।
এ বিষয়ে নুরুজ্জামান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘অকালে বাবা মারা যাওয়ার পর চার-ভাইবোনের মধ্যে একমাত্র ছেলে আমি। পরিবারের হাল ধরতে প্রথমে ছোট দুটি গুরু দিয়ে ব্যবসা শুরু করি। এরপর দুধের গরু এবং মাংসের গরু নিয়ে ব্যবসা শুরু করি। এখন আমার খামারে প্রায় প্রতি বছর কয়েক কোটি টাকার গরুর লালন পালন করা হয়।’
গরু ‘তুফান’ সম্পর্কে নুরুজ্জামান বলেন, ‘এই দুই বছর আগে বাছুর কিনে নিয়েছিলাম। এখন কমলাপুর বাজারের সবচেয়ে বড় গরু এটি। গরুর ব্যবসার পাশাপাশি আমি ম্যানেজমেন্টে পড়াশুনা করছি। আমার ইচ্ছে দেশে মাংসের চাহিদা মেটানো। ভবিষ্যতে আরো বড় আকারে খামার করার চিন্তা রয়েছে।’ গরু লালন-পালন সম্পর্কে তিনি বলেন, গরুর পেছনে দৈনিক ৩৫০ টাকা খরচ হয়। ঘাস, ভুষি, ভাত, খড় গরুর খাদ্যদ্রব্য।
আজ শনিবার দুপুরে কমলাপুর বাজারের গরু বাজার ঘুরে দেখা যায়, অনেক বড় বড় গরু উঠেছে। এর মধ্যে ‘টাইগার’, ‘কালু’ অন্যতম। তবে এখনো বিক্রি হচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা অলস সময় পার করছেন। গরু নির্ধারিত জায়গায় বেঁধে নিজেরা পাশে খালি জায়গায় ঘুমাচ্ছেন। কেউ রান্না করছেন। এভাবেই সময় পার করছেন।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা থেকে কমলাপুরের বাজারে আসা ব্যবসায়ী আসগর আলী বলেন, ‘ভাই, ঢাকা শহরে তো গরু কিনে রাখার জায়গা নেই। এ কারণে মানুষ ঈদের একদিন আগে কিনে। তবে আমরা বাজারের জায়গা ধরতে আগে থেকেই চলে এসেছি। বড় শখ করে পালন করা পশু ঢাকায় নিয়ে এসেছেন ভালো মূল্য পাওয়ার আশায়। বাজার এখনো জমেনি।’ রাজধানীতে পশু রাখার জায়গার সংকুলানের কারণে হাটে ক্রেতা সমাগম খুবই কম। যারা এসেছে, কেনার চেয়ে বাজার যাচাইয়ে বেশি মনোযোগী তারা।
ব্যবসায়ীরা বলছে, ভারতীয় গরু অবাধে না এলেও নেপাল-ভুটান আর মিয়ানমারের গরু বাজারে উঠেছে। ক্রেতা সমাগম এখন কম থাকলেও আগামীকাল থেকে বেচাকেনা জমে ওঠার আশা ব্যবসায়ীদের। বুধবার ঈদ হওয়ায় আগামীকাল রোববার বা সোমবার থেকে হাট জমজমাট হওয়ার আশা করছে ক্রেতা-বিক্রেতা সবাই।