অপ্রাপ্ত বয়স্ক নবদম্পত্তির বিষপানে আত্মহত্যা!
গাজীপুরের কাপাসিয়ায় বিয়ের ২১ দিন পর এসএসসি পরীক্ষার্থী এক নবদম্পতি বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে জানা গেছে। পুলিশ লাশ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শুক্রবার গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
পুলিশ ও নিহতদের স্বজনরা জানায়, প্রেমের সম্পর্কের জের ধরে তিন সপ্তাহ আগে কাপাসিয়া উপজেলার সন্মানিয়া ইউনিয়নের আড়াল গ্রামের হানিফ মিয়ার মেয়ে শাহীনা আক্তার নিপা (১৬) ও কড়িহাতা ইউনিয়নের ইকুরিয়া গ্রামের আফজাল হোসেন ভূঁইয়ার হৃদয় হোসেন (১৭) গোপনে গাজীপুর আদালতে গিয়ে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে হলফনামা দিয়ে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়। তারা উভয়েই আগামী এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। সম্প্রতি এ বিয়ের খবর প্রকাশ পেলে দুই পরিবারের অভিভাবকরা নবদম্পতি প্রাপ্ত বয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত বিয়ের বিষয়টি গোপন রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।
নিহত নিপার বাবা হানিফ মিয়া ও মা রিনা বেগম বলেন, পাঁচদিন আগে বাড়ির কাউকে না জানিয়ে জামাতা হৃদয় তাদের মেয়ে রিনাকে বাড়িতে নিয়ে যায়। এ কারণে হৃদয়ের বাড়ির লোকজন মেয়েকে খারাপ ভাষায় গালিগালাজ ও দুর্ব্যবহার করে। এ অপমান সহ্য করতে না পেরে নিপা তার বাড়িতে চলে আসে। বিয়ের ২১ দিনের মাথায় বৃহস্পতিবার দুপুরে খাবার খাওয়ার পর স্বামী হৃদয়ের সঙ্গে নিপা তার ঘরে কথাবার্তা বলছিল। বিকেল ৫টার দিকে তারা একসঙ্গে বিষপান করে। পরে একে অপরের গলায় জড়িয়ে ধরে ঘর থেকে বের হয়ে বারান্দায় এসে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। এ সময় গুরুতর অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী মনোহরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পথে নিপা মারা যায়। পরে সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হৃদয়কে রাজধানীর উত্তরা হাই-কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে মারা যায়।
এব্যা পারে নিহত হৃদয়ের বাবা আফজাল হোসেন বলেন, ছেলে-মেয়ে উভয়েই অপ্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ায় আইনগত বাধা থাকার কারণে তাদের প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। মেয়ের বাড়িতে গিয়ে হৃদয় কী কারণে বিষপান করেছে, তা তাদের জানা নেই।
কাপাসিয়া থানার ইন্সপেক্টর (অপারেশন) মনিরুজ্জামান জানান, খবর পেয়ে পুলিশ নিহতদেও লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শুক্রবার গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।