নারীর বিরুদ্ধে বিচারকের অভিযোগ, রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে চিঠি
এক নারী সম্মানহানি করছেন উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে চিঠি দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ নারী ও শিশু আদালতের সাবেক বিচারক জুয়েল রানা। বর্তমানে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত ওই বিচারক চিঠিতে মিথ্যা ও নোংরা অপপ্রচার আমলে না নেওয়ার প্রার্থনা জানান।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. মো. জাকির হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা চিঠি পেয়েছি, বিষয়টি খতিয়ে দেখব।’
গত ২৩ জুলাই নারায়ণগঞ্জ জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতের বিচারক মো. জুয়েল রানার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে ঢাকার ৫ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার এক নারী। ট্রাইব্যুনালের বিচারক শামসুন্নাহার বাদীর জবানবন্দি নেওয়ার পর ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমকে (সিএমএম) বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে ওই নারীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল বরাবর চিঠি দেন জুয়েল রানা। চিঠিতে বলা হয়, যথাবিহীত সম্মান প্রদর্শন পূর্বক নিবেদন এই যে, আমি গত ২০১৩-২০১৫ সালে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত জেলা জজ হিসেবে কর্মরত থাকাবস্থায় ন্যায় ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করা সত্ত্বেও একটি স্বার্থান্বেষী চক্রের ষড়যন্ত্রের শিকার হই এবং তারা নিজেরা আমার বিরুদ্ধে দুটি এবং ওই নারীকে দিয়ে আমার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করে। পরবর্তী সময়ে আমাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলে ওই চক্রটি আমার দুর্বল অবস্থার সুযোগ নিয়ে ওই নারীকে দিয়ে আমাকে ব্ল্যাকমেইলের চেষ্টা করে এবং আমাকে নানারূপে হুমকি দেয়। এ জন্য আমি ২০১৬ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ রমনা থানায় সাধারণ ডায়ের করি, যার নম্বর ১১০৬। পরবর্তী সময়ে ওই নারী ইলেকট্রনিক বিন্যাসে আমার বিরুদ্ধে অশ্লীল ও মিথ্যা বক্তব্য প্রচার করলে আমি ২০১৭ সালের ১২ মার্চ রমনা থানায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইন, ২০০৬-এর ৫৭ ধারায় মামলা (নম্বর ১৪) রুজু করি। ওই মামলাটি এখন চার্জ শুনানি পর্যায়ে রয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, ওই নারীর করা অভিযোগসহ অন্য অভিযোগগুলো থেকে মাননীয় সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শে আইন মন্ত্রণালয় আমাকে এরই মধ্যে অব্যাহতি দিয়েছে। সাম্প্রতিককালে ওই নারী বিভিন্ন মাধ্যমে আমাকে মামলা প্রত্যাহারের জন্য প্রভাবিত করার চেষ্টাসহ নানাভাবে হুমকি দিয়ে আসছিল। আমি এগুলো এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তিনি তাঁর পূর্বের অভিযোগের ঘটনার বর্ণনায় আমার বিরুদ্ধে আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন পত্রিকাসহ অন্যান্য মাধ্যমে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও কুৎসিত অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছেন। এই সব বর্ণনার আদৌ কোনো সত্যতা নেই। এগুলো কোনো কাহিনীকারের লেখা গল্পে আমার নাম সংযোজন ছাড়া কিছুই নয়। এই কারণে এসব অপপ্রচার ও মিথ্যা কাহিনী বর্ণনা থেকে আমার প্রতি আপনিসহ বিচার বিভাগীয় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের যেন কোনো বিরূপ ধারণা সৃষ্টি না হয় সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে আমাকে বাধিত করবেন।
এদিকে এ বিষয়ে কথা বলতে ওই নারীর মুঠোফোনে কথা বলতে চাইলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।