একসঙ্গে ৬ সন্তান প্রসব, একটিও বেঁচে নেই
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় এক সঙ্গে ছয়টি মৃত সন্তানের জন্ম দিয়েছেন এক প্রবাসীর স্ত্রী। আজ বুধবার বিকেলে আশুগঞ্জের বেসরকারি ক্লিনিক নূর মেডিকেল সেন্টারে সন্তানগুলোর জন্ম হয়।
ওই নারীর নাম মাহিনূর আক্তার (২৮)। তাঁর বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার দেউবাড়িয়া গ্রামে। মাহিনুরের স্বামীর নাম আবুল কালাম। তিনি সৌদি আরবে থাকেন।
স্বজনরা জানান, প্রায় চার বছর আগে মোবাইলে ফোনের মাধ্যমে মাহিনুরের বিয়ে হয় সৌদি আরব প্রবাসী আবুল কালামের সঙ্গে। বিয়ের প্রায় এক বছর পর কালাম দেশে আসেন। প্রায় চার মাস পর আবার বিদেশে চলে যান। এরপর উভয় পরিবারের লোকজন সন্তানের জন্য মাহিনূরকে বিভিন্ন কবিরাজি ওষুধ খাওয়ান। প্রায় দুই বছর পর কালাম আবারও দেশে আসেন। এ সময় তাঁর স্ত্রী সন্তান ধারণ করেন। পাঁচ মাস পর বিদেশে চলে যান কালাম।
গত মঙ্গলবার বিকেলে মাহিনুরের প্রসব বেদনা উঠে। আজ বুধবার সকালে তাঁকে নূর মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হয়। চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানান, গর্ভে চারটি সন্তান থাকতে পারে।
এরপর বিকেলে বাড়ি ফেরার পথে নৌকার উঠতে গেলে মাহিনুরের আবার প্রসব বেদনা ওঠে। এ সময় তিনি নৌকাতেই একটি সন্তান প্রসব করেন। পরে তাঁকে দ্রুত আবার নূর মেডিকেলে সেন্টারে আনা হয়। চিকিৎসকের সহায়তায় একে একে আরো পাঁচটি সন্তান প্রসব করেন মাহিনূর।
মাহিনুরের বাবা আব্বাস আলী ও শ্বশুর লাবু মিয়া জানান, সম্ভবত সন্তানের জন্য মাহিনূরকে তাঁর মা ও শাশুড়ি কিছু কবিরাজি ওষুধ খাইয়ে থাকতে পারেন।
এ ব্যাপারে ওই ক্লিনিকের চিকিৎসক শাহান আরা জানান, কোনো প্রকার অস্ত্রোপচার ছাড়াই ছয়টি অপরিপক্ক বাচ্চা ভূমিষ্ট হয়েছে। এর মধ্যে চারটি ছেলে ও দুইটি মেয়ে। সবগুলোর বাচ্চার কেবল হাত-পাসহ শারীরিক গঠন হয়েছে।
চিকিৎসক জানান, গর্ভধারণে সহায়ক যেকোনো ওষুধ গ্রহণসহ নানা কারণে মাতৃগর্ভে একাধিক ভ্রণের জন্ম হতে পারে। মাত্র চার থেকে পাঁচ মাস বয়সী এ বাচ্চাগুলোর শারীরিক গঠন পুর্ণাঙ্গতা পায়নি। ফলে তারা মৃত অবস্থায় ভূমিষ্ট হয়েছে। বর্তমানে মায়ের শারীরিক অবস্থা মোটামুটি ভালো। তবে মায়ের স্বাস্থ্যের প্রতি বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।