হাজি নান্নার বিরিয়ানি খেয়ে অর্ধশতাধিক শিক্ষক অসুস্থ
সিরাজগঞ্জে হাজি নান্নার বিরিয়ানি খেয়ে প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউটের (পিটিআই) অর্ধশতাধিক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার ওই বিরিয়ানি খেতে দেওয়া হয়। সিরাজগঞ্জের শহরের মুক্তিযোদ্ধার মোড়ের হাজি নান্নার বিরিয়ানি হাউস নামের হোটেল থেকে এসব খাবার দেওয়া হয়।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে ওই খাবারের দোকানে অভিযান চালিয়ে এক লাখ টাকা জরিমানা এবং এক কর্মচারীকে সাজা দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
পিটিআই সিরাজগঞ্জের সুপারিনটেনডেন্ট আবদুল কুদ্দুছ জানান, সোমবার জেলা স্কাউটের আয়োজনে একটি ওরিয়েনটেশন প্রোগ্রাম চলছিল। দিনব্যাপী এই প্রোগ্রামে ১৯০ জন শিক্ষকসহ মোট ২২২ জন অংশগ্রহণ করে। প্রশিক্ষণে দুপুরের খাবার হিসেবে হাজি নান্নার বিরিয়ানি দেওয়া হয়েছিল। ওই দিন বিকেলে থেকে অর্ধশতাধিক শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের প্রাথমিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
এদিকে দুপুরে আরো বেশ কয়েকজন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অসুস্থ শিক্ষকরা জানায়, ওরিয়েন্টেশনে বাজেটের টাকা বাঁচিয়ে হাজি নান্নার নিম্নমানের বিরিয়ানি দেওয়া হয়েছিল। এ কারণেই শিক্ষকরা অসুস্থ হয়ে পড়েছে।
সিরাজগঞ্জ জেলা স্যানিটারি পরিদর্শক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ জানান, ২২২ জন ওই খাবার খেয়েছিল। তাদের মধ্যে ৬৫ থেকে ৭০ জন খাদ্যে বিষক্রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে পড়েছে।
হাজি নান্নার বিরিয়ানি হাউস থেকে জব্দ করা জিনিসপত্র। ছবি : এনটিভি
এ বিষয়ে জেলা স্কাউটের সম্পাদক ছানোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা প্রায় অনুষ্ঠানেই নান্না বিরিয়ানি থেকে খাবার সরবরাহ করি। এ ধরনের সমস্যা এর আগে হয়নি।’
ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান
হাজি নান্নার বিরিয়ানি হাউসকে এক লাখ টাকা জরিমানা ও খলিলুর রহমান নামের এক কর্মচারীকে তিন মাস কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আরিফুর রহমান এ আদেশ দেন।
সিরাজগঞ্জ জেলা স্যানিটারি পরিদর্শক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, মঙ্গলবার বিকেলে ওই প্রতিষ্ঠানে পচা, বাসি ও নিম্নমানের খাবার মজুদ রাখার দায়ে খলিল নামের এক কর্মচারীকে আটক করা হয়। এ ছাড়া ওই প্রতিষ্ঠানকে এক লাখ টাকার জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে কর্মচারী খলিলকে তিন মাসের জেল দেওয়া হয়।
অভিযান শেষে কারখানা থেকে বিপুল পরিমাণ পচা ও বাসি মাংস, ভোজ্য তেল, লবণ, ভাজা পেঁয়াজসহ অন্যান্য সামগ্রী স্থানীয়দের সামনে ধ্বংস করা হয়।
সদর উপজেলা স্যানিটারি পরিদর্শক আল মামুন, সদর থানার উপপরিদর্শক মো. মোকাররম হোসেনসহ গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।