সিইসির সঙ্গে অন্য ইসিদের মতবিরোধ নেই
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নুরুল হুদার সঙ্গে বাকি চার নির্বাচন কমিশনারের (ইসি) কোনো মতবিরোধ নেই বলে মন্তব্য করেছেন ইসি মাহবুব তালুকদার।
আজ সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মাহবুব তালুকদার এই মন্তব্য করেন।
মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন সম্পর্কে নানা প্রকার দ্বিধা দ্বন্দ্বের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এই নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে বিভিন্নজন বিভিন্নভাবে ধরনের ছবক দিচ্ছেন। পত্রিকায় এমন সংবাদও বেরিয়েছে যে সিইসি এবং আমার (মাহবুব) মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। কিন্তু আমাদের মধ্যে কোনো রকম মতবিরোধ আছে বলে আমি মনে করি না।’
ইসি মাহবুব আরো বলেন, ‘কোনো নির্দিষ্ট বিষয়ে আমাদের দ্বিমত হতেই পারে কিন্তু তা মতবিরোধ হিসেবে গণ্য করা ঠিক হবে না।’
মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘পাঁচজন নির্বাচন কমিশনার মিলে একক স্বত্ত্বা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য হবে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমরা সকল কমিশনার দেশবাসীকে একযোগে একটি ভালো নির্বাচন উপহার দিতে বদ্ধ পরিকর। সাংবিধানিকভাবে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে সচেতন রয়েছি।’
গত ৭ আগস্ট মঙ্গলবার রাজধানীর নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ভবনে ‘নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধী নাগরিকগণের অংশগ্রহণে চ্যালেঞ্জসমূহ’ শীর্ষক কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন সিইসি কে এম নুরুল হুদা।
পাঁচ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এখন জাতীয় নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ আছে কি না এমন প্রশ্নে নুরুল হুদা বলেন, ‘এ ধরনের নির্বাচনে অনিয়ম হয়েই থাকে। বড় বড় পাবলিক নির্বাচনে কিছু কিছু অনিয়ম হয়ে থাকে। আমরা সেগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিয়ে থাকি। বরিশালে বেশি অনিয়ম হয়েছে, সেখানে আমরা বাড়তি ব্যবস্থা নিয়েছি। নির্বাচনে অনিয়ম হলে যেভাবে নিয়ন্ত্রণ করা দরকার, সেভাবে আমরা নিয়ন্ত্রণ করব।’
নির্বাচনী পরিবেশের সুব্যবস্থা আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশন বলেন, ‘অসুবিধা কোথায়? আমি তো কোনো অসুবিধা দেখি না। সংবিধানের বিধান অনুসারে নির্বাচন হবে।’
‘নির্বাচনগুলোতে অনিয়ম হবে না, সে নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না’ সিইসির এমন মন্তব্যের পর সব মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে। সিইসির এই মন্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন চার নির্বাচন কমিশনার। সিইসির ওই বক্তব্যের পর এরই মধ্যে তাঁকে সাংবিধানিক পদে থেকে সংযত হয়ে কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
এসব ঘটনা ঘটার প্রায় এক সপ্তাহ পরও সিইসির সঙ্গে চার নির্বাচন কমিশনারের এখনো সাক্ষাৎ মেলেনি। এমনকি তারা কেউ নিজেরা উদ্যোগী হয়ে এই বিষয়ে কথা বলারও চেষ্টা করেননি। সব মিলিয়ে সাংবাদিকদের ভেতরেও এক ধরনের ধারণা তৈরি হয় যে, আসলেই সিইসির ওই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে নির্বাচন কমিশনারদের ভেতরে বিরোধ তৈরি হয়েছে কি না। দু-একটি গণমাধ্যমে অবশ্য কমিশনারদের ভেতরে দ্বন্দ্ব নিয়ে খবর প্রকাশ করে। এসব বিষয়ে জানতে চাইলে আজ বিকেলে মাহবুব তালুকদার গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন।