সিইসির বক্তব্য অনিয়মকারীদের উসকে দেবে : মাহাবুব
বড় বড় নির্বাচনে অনিয়ম নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে. এম. নুরুল হুদার দেওয়া বক্তব্যের সঙ্গে একমত নন বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মাহাবুব তালুকদার। তিনি বলেছেন, ‘যারা নির্বাচনে অনিয়ম করে জিততে চায়, এই বক্তব্য তাদের উৎসাহিত করবে। উসক দেবে, সাহস জোগাবে। যেটা কাম্য নয়।'
সম্প্রতি তিন সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগের পর সিইসি কে. এম. নুরুল হুদা বলেছিলেন, ‘এ ধরনের নির্বাচনে অনিয়ম হয়েই থাকে। বড় বড় পাবলিক নির্বাচনে কিছু কিছু অনিয়ম হয়ে থাকে।’
কয়েক দিন ধরে সিইসির এ মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। এরই মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বরত ব্যক্তির আরো সতর্ক হয়ে কথা বলা উচিত।’
এর মধ্যেই আজ শুক্রবার নির্বাচন কমিশনার মাহাবুব তালুকদারকে তাঁর মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি এ ব্যাপারে সিইসির সঙ্গে নিজের মতভেদ প্রকাশ করেন।
মাহাবুব তালকুদার বলেন, ‘সিইসির বক্তব্য অনিয়মকারীদের উসক দেবে। হতে পারে এটা তাঁর ব্যক্তিগত মতামত। এটা কমিশনের সিদ্ধান্ত হতে পারে না। আমি অন্তত ব্যক্তিগতভাবে মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে. এম. নুরুল হুদার বক্তব্যের সঙ্গে মোটেও একমত নই।'
এ সময় মাহাবুব তালুকদার শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, ‘এই বক্তব্যে সাধারণ মানুষের ভেতরেও একটা খারাপ ধারণা তৈরি হতে পারে। এটা কমিশনের ভাবমূর্তিরও একটা ব্যাপার। তবে কিসের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এমন কথা বলেছেন, তা তো জানি না। এটা তাঁর নিতান্তই পারসোনাল (ব্যক্তিগত) মতামত। আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের অঙ্গীকার নিয়ে নির্বাচন কমিশনে এসেছি। আমি চাই, জাতি একটি ভালো নির্বাচন দেখুক।'
এর আগে সিইসির দেওয়া বক্তব্যে দ্বিমত পোষণ করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমাদের দেশের বাস্তবতায় সিইসি হয়তো মনে করেছেন এটাই সত্যি। কিন্তু তাঁর বক্তব্যে আরো সংযত হওয়া দরকার। একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে মূল দায়িত্বে তিনি আছেন। এটা স্লিপও হতে পারে। আমি আশা করি, তিনি ভবিষ্যতে এ ধরনের বক্তব্য দেবেন না।’
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বর্তমান নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করে। কুমিল্লা ও রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রশংসা কুড়িয়েছিল কে. এম. নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন। কিন্তু পরবর্তী সময়ে পাঁচ সিটি নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ ওঠায় সমালোচনার মুখে পড়ে ইসি।