সার্ভারে ত্রুটি, চট্টগ্রামে টিকেট বিক্রিতে দেরি
সার্ভারের ত্রুটির কারণে চট্টগ্রামে ঈদের অগ্রিম টিকেট বিক্রি আজ দেরিতে শুরু হয়েছে। এর ফলে রাত জেগে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট না পেয়ে ভোগান্তির কবলে পড়ে কয়েক হাজার মানুষ।
শুক্রবার সকাল থেকে বন্দরনগরীর স্টেশন সার্ভারে ত্রুটি দেখা দেয়। এর ফলে তৃতীয় দিনের মতো টিকেট বিক্রিতে বিপত্তি দেখা দেয়। আজ ১৯ আগস্টের অগ্রিম টিকেট বিক্রির কথা ছিল।
রেলওয়ের চট্টগ্রাম স্টেশনের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ সকাল ৯টায় এনটিভিকে বলেন, ‘আজ সকালে যখন টিকেট বিক্রির জন্য সার্ভার খুলতে যাই, তখন দেখা যায়, অপটিক ফাইবার কাটা যাওয়ার সেটি কাজ করছে না। সকাল ৮টা থেকে টিকেট বিক্রি শুরু হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেটি আমরা চালু করতে পারিনি। মেরামতের কাজ করা হচ্ছে। আশা করি, খুব শিগগির তা চালু করা যাবে এবং টিকেট বিক্রি শুরু হবে। এখন চলতি যে টিকেটগুলো আছে, সেটা আমরা হাতে লিখে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি।’
‘এখানে সর্বমোট টিকেটের পরিমাণ হলো আট হাজার ৮১৩টি। তার মধ্যে ২৫ ভাগ টিকেট অনলাইনে আছে। পাঁচ ভাগ টিকেট ভিআইপিদের জন্য। পাঁচ ভাগ রেলওয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য। অবশিষ্ট ছয় হাজার ৮৪৫টি টিকেট ১০টি কাউন্টারের মাধ্যমে বিক্রি করা হবে,’ যোগ করেন ব্যবস্থাপক।
সকাল পৌনে ১০টার দিকে সার্ভার চালু হওয়ার পর টিকেট বিক্রি শুরু হয়। প্রায় পৌনে দুই ঘণ্টা টিকেট বিক্রি বন্ধ ছিল চট্টগ্রাম স্টেশনে।
সকালে স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, টিকেটের আশায় অনেকেই রাত থেকে বসে আছেন স্টেশন চত্বরে। সূর্য ওঠার আগেই টিকেট সংগ্রহের জন্য দীর্ঘ লাইন পড়ে স্টেশনে। পুরুষদের পাশাপাশি নারীরা এসেও জড়ো হন। অনেকে পত্রিকা বিছিয়ে কাউন্টারের সামনেই শুয়ে-বসে থাকেন। সকাল ৮টায় সার্ভারের ত্রুটির কথা শুনে বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে মানুষ। টিকেট বিক্রি শুরু হলে মানুষের উদ্বেগের অবসান হয়।
টিকেট কিনতে আসা এক নারী (৩৫) বলেন, তিনি সকাল সাড়ে ৫টায় স্টেশনে এসেছেন। অনেকেই বলেছেন, তাঁরা রাত ১১টায় এসেছেন। টিকেট সকাল ৮টায় দেওয়ার কথা। কিন্তু এখানো দেওয়া হচ্ছে না।
আরেকজন পুরুষ যাত্রী (৫০) বলেন, ‘সকাল ৮টায় সার্ভার খুলছে। কিন্তু আগে দেখলেও তো পারত। তাহলে তো বুঝতে পারত একটা কিছু হইছে।’
ভোর থেকে এসে স্টেশনে বসে আছেন এক তরুণী (৩০)। তিনি বলেন, ‘আমরা বসে আছি টিকেটের জন্য। এখন বলতাছে, টিকেট নাকি দেবে না। সার্ভার নষ্ট। বলতাছে যান্ত্রিক ত্রুটি। সেটা তো আগে থেকে ব্যবস্থা নেবে না।’
তাঁর সঙ্গে বসা আরেক নারী বলেন, ‘জানে তো ৮টা থেকে টিকেট বিক্রি হবে। আগে থেকে ব্যবস্থা করে রাখবে না। বলতাছে, পাঁচ মিনিট, দশ মিনিট; এক ঘণ্টা হয়ে গেল। এটা কোনো কথা। মানুষকে এভাবে বিপদে ফেলার।’
এদিকে টিকেট কালোবাজারি ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি যাত্রীদের ঠিকানা সংবলিত তথ্য নির্দিষ্ট ফরমের মাধ্যমে যাচাই করা হচ্ছে বলে জানায় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।