সড়ক পরিবহন আইনটি পুনর্বিবেচনার আহ্বান কাঞ্চনের
মন্ত্রিসভায় উত্থাপিত সড়ক পরিবহন আইনে চালকদের শাস্তির বিষয়ে 'শুভঙ্করের ফাঁকি' রয়েছে বলে মন্তব্য করে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনের সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন। তাই এই প্রস্তাবিত আইনটি পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
আজ সোমবার ‘নিরাপদ সড়ক চাই’-এর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি জানান, এ আইনে তাঁদের কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়নি।
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘আইনে সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করা হয়েছিল ১০ বছর আর আদালতের নির্দেশনা ছিল সাত বছর, কিন্তু এখন প্রস্তাব করা হয়েছে পাঁচ বছর কারাদণ্ড। সর্বোচ্চ শাস্তির কথা বলা হলেও সর্বনিম্ন শাস্তির কথা বলা হয়নি।’
ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘হেলপারের জন্য রাখা হয়েছে পঞ্চম শ্রেণি পাস। সে কি সারাজীবন হেলপার হওয়ার জন্য গাড়িতে উঠে? নাকি ড্রাইভার হওয়ার জন্য উঠে। তাহলে একজন হেলপার হেলপারি করতে করতে কি সে লেখাপড়াও করবে এইট পাস করার জন্য? নাকি দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে একটা সার্টিফিকেট এনে জমা দিয়ে সে ড্রাইভার হবে?’
প্রস্তাবিত আইনটির ব্যাপারে কাঞ্চন বলেন, ‘এটা গ্রহণযোগ্য না আমাদের কাছে। আমরা আশা করব গ্রহণযোগ্য হওয়ার মতো বিষয়গুলো তারা অন্তর্ভুক্ত করবে।’
আইনটির নাম পরিবর্তন করে ‘সড়ক নিরাপত্তা ও সড়ক পরিবহন আইন’ করাসহ বেশকিছু প্রস্তাব তুলে ধরেন ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, ‘এ আইন বাস্তবমুখী ও কার্যকর করতে হলে সংশোধন ও সকল মহলের পরামর্শ গ্রহণ জরুরি।’
বহুল আলোচিত সড়ক পরিবহন আইনের খসড়া আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়। বেপরোয়া গাড়ি চালানোর ফলে দুর্ঘটনায় মানুষের প্রাণহানির জন্য সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের সাজা, পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড রেখে সড়ক পরিবহন আইন, ২০১৮-এর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
তবে যদি হত্যার উদ্দেশ্যে কেউ গাড়ি চালায় এবং সেটা প্রমাণিত হয়, তাহলে তা ফৌজদারি আইনের দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা অনুসারে বিচার হবে। সে ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। তদন্ত কর্মকর্তার প্রতিবেদনের সাপেক্ষে নির্ধারণ করা হবে দুর্ঘটনার প্রকৃতি কী ছিল।
সোমবার সকালে সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে এই আইনটির অনুমোদন দেওয়া হয়।