শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা সমর্থন করা যায় না : মার্কিন দূতাবাস
নিরাপদ সড়কের দাবিতে দেশব্যাপী চলমান ছাত্র আন্দোলনে সহিংস হামলা কোনোভাবেই সমর্থন করা যায় না বলে মন্তব্য করেছে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস।
আজ রোববার মার্কিন দূতাবাসের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক বিবৃতি থেকে এ কথা জানা যায়।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত সপ্তাহ থেকে সড়কে উন্নত যানবাহন ও নিরাপত্তার দাবিতে স্কুল-কলেজের ছাত্রদের নেতৃত্বে বাংলাদেশব্যাপী চলমান শান্তিপূর্ণ ছাত্র আন্দোলন এরই মধ্যেই সারা দেশের মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করেছে।
দূতাবাস বলে, ‘কাণ্ডজ্ঞানহীনভাবে সম্পত্তি বিনষ্ট করা, বিশেষ করে বাস ও অন্যান্য যানবাহন ধ্বংসের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের ওই কর্মকাণ্ড আমরা গ্রহণযোগ্য মনে করি না। কিন্তু এসবের কোনো কিছুই নিরাপদ বাংলাদেশের লক্ষ্যে শান্তিপূর্ণভাবে নিজেদের গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চা করতে থাকা হাজার হাজার তরুণের ওপর নৃশংস হামলা ও হিংস্রতাকে সমর্থন করা যায় না।’
গতকাল শনিবার রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুরে হামলার শিকার হয় মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের গাড়িবহর।
গত ২৯ জুলাই রাজধানীর কুর্মিটোলার বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের বাসের চাপায় দুই কলেজ শিক্ষার্থী নিহত হয়। এ ছাড়া আহত হয় বেশ কয়েকজন। নিহত শিক্ষার্থীরা হলো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আবদুল করিম রাজীব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে এরই মধ্যে ২০ লাখ টাকার অনুদান দিয়েছেন। নৌমন্ত্রী শাজাহান খানও নিহতদের প্রত্যেক পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় বিক্ষোভে ফেটে পড়ে শিক্ষার্থীরা। টানা অষ্টম দিনের মতো তারা রাস্তায় নিয়েছে। গতকাল রাজধানীর জিগাতলায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় একদল যুবক। আজ পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা।
স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা রাস্তার অবস্থান নেওয়ার থেকে ঢাকার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোয় বাস চলাচল একেবারেই কমে যায়। এমনকি আন্তজেলা বাস চলাচলও বন্ধ করে দেন মালিক ও শ্রমিকরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা নয়টি দাবি করেছে। তাদের সব দাবি মেনে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালও বলেছেন, শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। এখন তাদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার উচিত বলে জানান তিনি।
এরই মধ্যে গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক সমিতির নেতারা বলেছেন, নিরাপদ বোধ না করা পর্যন্ত তাঁরা রাস্তায় বাস নামাবেন না। ফলে অঘোষিত ধর্মঘট চলছে।