নিরাপদ সড়কের দাবিতে চলচ্চিত্রকর্মীদের মানববন্ধন
বাংলাদেশের সড়কপথে হত্যার মিছিল বন্ধ এবং নিরাপদ সড়কের দাবিতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্রকর্মী, শিক্ষক, সংগঠক, সংসদকর্মী, লেখক ও শিক্ষার্থীরা গতকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শামসুন নাহার হলসংলগ্ন সড়কদ্বীপে স্থাপিত তারেক মাসুদ-মিশুক মুনীর স্মরণ স্থাপনার সামনে একটি প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনের আয়োজন করে। চলচ্চিত্র নির্মাতা ও ফেডারেশন অব ফিল্ম সোসাইটিজ অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক বেলায়াত হোসেন মামুনের সঞ্চালনায় সমাবেশ ও মানববন্ধনে বক্তব্য প্রদান করেন বিশিষ্ট মানবাধিকারকর্মী ড. হামিদা হোসেন, বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার ক্যাথরিন মাসুদ, চলচ্চিত্র গবেষক ও অধ্যাপক ড. ফাহমিদুল হক ও চলচ্চিত্রকার প্রসূন রহমান।
বিকেল ৫টায় সমাবেশের শুরুতে মৌন মানববন্ধনে সকলে অংশগ্রহণ করেন। সন্ধ্যা ৬টায় সমাবেশে বক্তৃতাপর্ব শুরু হয়। বক্তৃতাপর্বের শেষে সন্ধ্যা ৭টায় সড়ক-মহাসড়কে নিহত সকলের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করে আলোক প্রজ্বালন করা হয়।
এই সমাবেশ ও মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট চলচ্চিত্রকার মসিহউদ্দিন শাকের, চলচ্চিত্রকার আবু সাইয়ীদ, শিল্পী সুলেখা চৌধুরী, চলচ্চিত্রকার জাঈদ আজিজ, চলচ্চিত্র সংসদকর্মী ডা. জহিরুল ইসলাম কচি, চলচ্চিত্র সংসদকর্মী ও আলোকচিত্রশিল্পী মীর শামছুল আলম বাবু, শিল্পী ও অ্যাকটিভিস্ট আহমেদ মনিরুদ্দিন তপু, চলচ্চিত্রকার পলাশ রসূল, চলচ্চিত্রকার হুমায়রা বিলকিস, চলচ্চিত্র গবেষক ও লেখক বিধান রিবেরু, চলচ্চিত্রকার তাসমিয়াহ আফরিন মৌ, চলচ্চিত্রকার ও বাংলাদেশ শর্ট ফিল্ম ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মৃদুল মামুন, চলচ্চিত্র সংসদকর্মী রোদেলা নিরুপমা, চলচ্চিত্র নির্মাতা ও চলচ্চিত্র সংসদকর্মী হাবিবুর রহমান, চলচ্চিত্রকার খন্দকার সুমন, চলচ্চিত্রকার ও চলচ্চিত্র সংসদকর্মী অদ্রি হৃদয়েশ, চলচ্চিত্রকর্মী আবির শ্রেষ্ঠ, চলচ্চিত্র সম্পাদক চৈতালী সমাদ্দর, চলচ্চিত্রকার অতনু পাটোয়ারী, চলচ্চিত্র সংসদকর্মী ও আলোকচিত্রশিল্পী সাদেক হোসেন সনি, ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক হাফিজুল ইসলাম আপন, চলচ্চিত্রকর্মী রিপন কুমার দাশ, চলচ্চিত্র সংসদকর্মী ও স্থপতি সাউদা আক্তার, চলচ্চিত্র সংসদকর্মী রাসেল আহমেদ রনি, চলচ্চিত্রগ্রাহক বিদ্রোহী দীপন, চলচ্চিত্র নির্মাতা হুমায়ুন কবির শুভ, চলচ্চিত্রকর্মী সঙ্গীতা অপরাজিতাসহ অনেক তরুণ চলচ্চিত্রকার এবং চলচ্চিত্রকর্মী।
বক্তারা সমাবেশে বলেন, 'সড়কে নৈরাজ্য চলছে বহুকাল ধরে। বারবার আমরা পিষ্ট হচ্ছি, আমাদের রক্ত-হাড়-মজ্জা মিশে যাচ্ছে কালসিটে পথে। আমাদের স্বপ্ন, আমাদের জীবন থমকে যাচ্ছে সড়কের মড়কে। এই মড়ক মনুষ্যসৃষ্ট, এই হত্যার বিস্তার মানুষের তৈরি। আর এসব মানুষ বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে, বাংলাদেশের আইনকে, বাংলাদেশের সড়ক ব্যবস্থাপনার সকল সিস্টেমকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে বারংবার। হত্যাকারীদের পিশাচের মতো দাঁতাল হাসি আমাদের পথে নামতে বাধ্য করছে, আমাদের শিশু-কিশোরদের পথে নামতে বাধ্য করেছে, মানুষের জীবন সবচেয়ে মূল্যবান, আর তা সড়কের কালো পিচের রাস্তায় পিষ্ট হওয়ার জন্য নয়।’
বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশের সড়কপথে যা ঘটছে তা হত্যাকাণ্ড। এগুলোকে দুর্ঘটনা বলে ছাড় দেওয়ার কিছু নেই। গড়ি চালনার প্রশিক্ষণবিহীন চালক, ফিটনেস ও লাইসেন্সবিহীন গাড়ি, মাদকাসক্ত চালক-হেল্পারদের পথে ছেড়ে দিয়ে রাষ্ট্র এই সব হত্যাকে ‘দুর্ঘটনা’ বলতে পারে না।