এএসপির লাথিতে হকার আহত, তদন্ত কমিটি
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় এক সহকারী পুলিশ সুপারের (এএসপি) লাথিতে হকার আহত হওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শফিকুল ইসলাম এই কমিটিতে রয়েছেন।
গতকাল সোমবার দুপুরে ভৈরবপুর এলাকায় ভৈরব-কুলিয়ারচর সার্কেলের অফিসের সামনে এ লাথি মারার ঘটনা ঘটে।
জানতে চাইলে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ডিআইজি স্যারের নির্দেশে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আমি আগামীকাল বুধবার সরেজমিন পরিদর্শন শেষে প্রতিবেদন জমা দেব।’
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ জানান, গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর অফিশিয়াল ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, গতকাল সোমবার দুপুরে হকার সাদেক মিয়া ভৈরবপুর এলাকায় ভৈরব-কুলিয়ারচর সার্কেলের অফিসের সামনে কাচা আমের আচার বিক্রি করছিলেন। এ সময় এএসপি এ কে এম কামরুল ইসলাম পাঁচ টাকার আচার দিতে হকার সাদেককে বলেন। আচার দেওয়ার পর পরিমাণ কম হওয়ার অজুহাতে তাঁর বুকে সজোরে লাথি মারেন। পরে তিনি লাঠি দিয়ে তাঁকে আঘাত করে আহত করেন বলে অভিযোগ হকার সাদেক মিয়ার।
ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন সাদেক মিয়াকে উদ্ধার করে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তিনি বর্তমানে সেখানে চিকিৎসাধীন আছেন। আহত সাদেক মিয়া কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার নওগাঁও গ্রামের বাসিন্দা।
ঘটনা জানার পর স্থানীয় সংবাদকর্মীরা এএসপি এ কে এম কামরুল ইসলামের কাছে ঘটনার সত্যতা জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে অস্বীকৃতি জানান। সাংবাদিকরা তাঁর অফিসের সামনে অবস্থান নিলে একপর্যায়ে অফিসের সব গেইট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এ ঘটনার খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোখলেছুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে ওই দিন সন্ধ্যায় হাসপাতালে গিয়ে আহত আচার বিক্রেতা সাদেক মিয়াকে দেখতে যান এবং তাঁর চিকিৎসার খোঁজ-খবর নেন।
এদিকে রাত ১১টার দিকে এএসপি কামরুল ইসলাম হাসপাতালে গিয়ে তাঁর ভুল স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশসহ চিকিৎসার ব্যবস্থা করার কথা জানান হকার সাদেক মিয়ার ছেলে ছিদ্দিক মিয়া।
বিষয়টি গতকাল দেশের বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়া এবং আজ মঙ্গলবার প্রিন্ট মিডিয়াতে প্রচারিত হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। নিন্দার ঝড় বয়ে যায় সর্বত্র।