শুনেছি বরিশালে ভোটকেন্দ্র দখল হয়েছে
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন সম্পর্কে নির্বাচন কমিশনার মাহাবুব তালুকদার বলেছেন, ‘আমি শুনেছি বরিশালে ভোটকেন্দ্র দখল হয়েছে। সেখানে একজন মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে খারাপ আচরণও করা হয়েছে। বিএনপির প্রার্থী ভোট বর্জনও করেছে। এসব বিষয় নিয়ে আমরা কমিশনে আলাপ-আলোচনা করছি।’
আজ সোমবার দুপুর ১টার দিকে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের মনিটরিংয়ের দায়িত্বে থাকা এই নির্বাচন কমিশনার এসব কথা বলেন।
মাহাবুব তালুকদার এনটিভি অনলাইনকে আরো বলেন, ‘আমরা জেনেছি বরিশালে খুব বাজে অবস্থা। আমরা তদন্ত করে দেখছি। এসব নিয়ে আলোচনা করছি। কমিশন সভায় যে সিদ্ধান্ত হয়, তা-ই জানানো হবে।’
আজ সোমবার সকাল ৮টা থেকে রাজশাহী ও সিলেটের সঙ্গে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শুরু হয়। পরে দুপুর ১২টায় বরিশাল প্রেসক্লাবের এসে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী। এ সময় তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে ৭০-৮০টি কেন্দ্রে আমাদের এজেন্টদের ঢুকতে দেয়নি। অন্য যেসব কেন্দ্রে পোলিং এজেন্টরা প্রবেশ করেছে, সেখানে সবাই মিলে সিল করেছে, নৌকার মার্কার সিল করেছে। এসব কারণেই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিচ্ছি।’
তার আগে নির্বাচনে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহাবুবও সংবাদ সম্মেলন করে ভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সরকারি মহাবিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে বাসদের মেয়র প্রার্থী ডা. মনীষা চক্রবর্তী হামলার শিকার হন বলে অভিযোগ করেন। মনীষা অভিযোগ করেন, সরকারি মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে তিনি দেখতে পান, সেখানে নৌকা মার্কার পক্ষে জাল ভোট দেওয়া হচ্ছে। নৌকা মার্কায় আগে থেকে সিলমারা ব্যালট পেপার দেখতে পান তিনি। তাৎক্ষণিকভাবে তিনি এর প্রতিবাদ করেন। এ সময় আওয়ামী লীগের পোলিং এজেন্টরা তাঁর ওপর চড়াও হয়। তাঁকে মারধর করে মেঝেয় ফেলে দেয় তারা। এ ঘটনায় মনীষার বাঁ হাতে আঘাত লাগে। হাতে ব্যান্ডেজ করা হয়েছে।
হামলার ঘটনায় বরিশাল সিটি নির্বাচন স্থগিত করার দাবি জানান বাসদের মেয়র প্রার্থী মনীষা।
এসব ব্যাপারে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না এই ব্যাপারে। তবে আপনাদের কাছে কোনো তথ্য থাকলে আমাদের দিন। আমরা ভোটকেন্দ্র বন্ধ করে দেবো।’
এদিকে কন্ট্রোল রুম থেকে মেজর রাজু এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত যে খবর পাচ্ছি, তাতে অধিকাংশ কেন্দ্রেই ঝামেলার খবর শুনতে পাচ্ছি।’
নির্বাচন কমিশন সূত্র জানায়, বরিশাল সিটি করপোরেশনে দুই লাখ ৪২ হাজার ৬৬৬ জন ভোটার রয়েছেন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ২১ হাজার ৪৩৬ ও নারী ভোটার এক লাখ ২০ হাজার ৭৩০ জন।
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে ছয়জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ (নৌকা), বিএনপির মো. মজিবর রহমান সরোয়ার (ধানের শীষ), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ওবায়দুর রহমান মাহবুব (হাতপাখা), বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির আবুল কালাম আজাদ (কাস্তে), বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের মনীষা চক্রবর্তী (মই) ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. ইকবাল হোসেন (লাঙ্গল)।
বরিশাল সিটিতে ৩০টি সাধারণ ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে। এখানে ১২৩টি ভোটকেন্দ্র ও ৭৫০টি ভোটকক্ষ রয়েছে।