বিএনপি সিটি ভোটে গেছে সরকারের মুখোশ খুলতে
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ বলেছেন, সিটি করপোরেশন নির্বাচন হচ্ছে সরকারের একটি প্রকল্প। আওয়ামী লীগের এ নির্বাচনী প্রকল্পের উদ্দেশ্য হচ্ছে জনগণকে বাইরে রেখে ক্ষমতা দখল। যার সভাপতিত্ব করছে নির্বাচন কমিশন, প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘অনেকে আমাদের বলেন, সবকিছু জেনে কেন সিটি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। আমরা এসব স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি বারবার জনগণের সামনে সরকার ও নির্বাচনের মুখোশ উন্মুক্ত করতে।’
‘যখন সিটি নির্বাচনগুলোতে ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার দেখছে, তখনই বিরোধী নেতাকর্মী ও সমর্থকদের হামলা, মামলা গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করছে। এমনকি মহিলাদের পর্যন্ত অকথ্য ভাষায় আক্রমণ করা হচ্ছে,’ যোগ করেন আমীর খসরু।
আজ রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বিএনপি নেতা এসব কথা বলেন।
‘খালেদা জিয়াকে আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্ত করা যাবে না’
আওয়ামী লীগের পুরোনো স্বপ্ন একদলীয় শাসন বাকশাল কায়েম করার জন্যই খালোদা জিয়াকে মিথ্য মামলায় কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন আমীর খসরু। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া বাইরে থাকলে সরকার তাদের পুরোনো বাকশাল কায়েম করতে পারবে না। সেই জন্য যে মামলায় তাঁর কোনো সম্পৃক্ততা নেই, সেই মামলায় তাঁকে সাজা দিয়ে কারাগগারে আটকে রেখেছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগের বাকশাল কায়েমের প্রধান অন্তরায় হচ্ছেন খালেদা জিয়া। আর সেই জন্য তাঁকে সাজানো মিথ্যা মামলায় কারাগারে আটকে রেখেছে। মাত্র দুই কোটি টাকার জন্য তাঁর পাঁচ বছরের সাজা হয়েছে। অথচ আজকের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ১৫টি মামলা ছিল, কিন্তু শেখ হাসিনার মামলাগুলো সব বাতিল হয়ে গেল।
আমীর খসরু বলেন, আজ বাংলাদেশ অভিভাবকহীন, এখানে জনগণের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। এখন যাঁরা ক্ষমতায় আছেন, তাঁরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত নন। তাই দেশের গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হলে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে; এর কোনো বিকল্প নেই।
‘খালেদা জিয়াকে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মুক্ত করা যাবে না। তাঁকে মুক্ত করতে হলে জাতীয় ঐক্য তৈরি করে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত করতে হবে। আজ দেশের সব নাগরিক সমাজ ঐক্যবদ্ধ, সুশীল সমাজ ঐক্যবদ্ধ। এখন রাজনীতিবিদদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণ আর রাজনীতিবিদরা ঐক্যবদ্ধ না হলে গণতন্ত্র ও গণতন্ত্রের মাকে মুক্ত করা সম্ভব না। কোন কোন রাজনীতিবিদ গণতন্ত্রের পক্ষে, দেশের জনগণ সেটি লক্ষ করছে।’
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, ‘যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে, তারা জাতীয় ঐক্য চায় না। তাদের বিষয়ে জনগণ সজাগ দৃষ্টি রাখছে। তাই রাজনীতিবিদদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা কোনদিকে যাবে। তারা কি জনগণের অধিকার আদায়ে ঐক্য করবে, নাকি গণতন্ত্র হরণ দেখেও চুপ থাকবে।’
নিজ দলের বিষয়ে সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের দলের মাঝেও সবার মাঝে একতা থাকতে হবে। আমি জানি, আমাদের দলের মাঝে বিভিন্ন কথা, মত আছে। তাই অতীতে কী হয়েছে, এসব ভুলে গিয়ে দেশের জন্য গণতন্ত্রের জন্য সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। এ ছাড়া গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়া ও জনগণের অধিকার আদায় করা সম্ভব না। আমি বিশ্বাস করি, আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে আগামীতে জনগণের ভোটে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হয়ে সরকার গঠন করবেন।