মৎস্য ও মুরগির ব্যবসা করেন ছাত্রদলের সভাপতি-সম্পাদক
সিলেট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন মৎস্য ব্যবসায়ী ও সাধারণ সম্পাদক দিলোয়ার হোসেন দিনার মুরগির ব্যবসায়ী। তাঁদের দুজনের একজন এসএসসি উত্তীর্ণ, অন্যজন অকৃতকার্য। আছে স্ত্রী-সন্তানও।
একই অবস্থা মহানগর ছাত্রদলের। সভাপতি সুদীপ জ্যোতি এষ এইচএসসি পাস করলেও চাকরি করছেন সিলেট কোর্টের মুহুরি হিসেবে। আর সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বি আহসান ২০০৩ সালে ছাত্রলীগ থেকে ছাত্রদলে যোগ দেন। এর পর থেকে ছিলেন প্রবাসে। তিনিও এইচএসসি পাস করতে পারেননি।
মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর সুবিদবাজারে সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমন তথ্য তুলে ধরেন ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির নেতা ও পদবঞ্চিতরা। তাঁরা বলেন, গঠনতন্ত্র পরিপন্থী কমিটি দিয়ে ছাত্রদর ধ্বংসের পাঁয়তারা চলছে।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ উদ্দিন রুবেল। উপস্থিত ছিলেন এমসি কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক বদরুল আজাদ রানা, নবগঠিত কমিটি থেকে পদত্যাগ করা জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি নজরুল ইসলাম, সহসভাপতি মাশরুর রাসেল, যুগ্ম সম্পাদক সোহেল ইবনে রাজা, আনোয়ার হোসেন রাজু, শাকিল রহমান, মহানগর ছাত্রদলের সহসভাপতি আবদুল হাসিব, শিহাব খান, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সাহিত্য প্রকাশনা সম্পাদক কামরান আহমদ, ছাত্রদল নেতা ইমরুল হোসেন, লোকমান হোসেন, মঞ্জুর আহমদ প্রমুখ।
লিখিত বক্তব্যে আশরাফ উদ্দিন রুবেল বলেন, গত ১৩ জুন সিলেট ছাত্রদলের কমিটি গঠন করা হয়। এতে মৎস্য আড়ত ব্যবসায়ী নেতা, বিবাহিত ও তিন সন্তানের জনক, চিহ্নিত ছিনতাইকারী এবং স্কুলের গণ্ডি পেরোতে পারেনি এমন কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে, যার জন্য সিলেটের তৃণমূল ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মর্মাহত ও বিস্মিত।
রুবেল বলেন, ১/১১-এর চিহ্নিত দালাল এবং সরকারের এজেন্সি হিসেবে কাজ করে আসা বিতর্কিত বিএনপি নেতার ইন্ধনে দলের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলে আসছে। এরই অংশ হিসেবে সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ব্যক্তিকে প্রলোভনের মাধ্যমে অযোগ্য, অশিক্ষিত, অনভিজ্ঞ এবং দুরদর্শীহীন কর্মীদের দিয়ে সংগঠনের মূল দায়িত্বে মনোনীত করা হয়েছে, যা সংগঠনের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। যার কারণে দলের দুঃসময়ে শিক্ষিত, ত্যাগী, নম্র, ভদ্র, নির্যাতিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সংগঠনের কাজ করার মনোবল হারিয়ে ফেলেছে।
বক্তারা বলেন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আলতাফ হোসেন সুমন ২০১০ সালে মৎস্যজীবী ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচনে সহসভাপতি পদে পরাজিত হন। সাধারণ সম্পাদক দিনার লেখাপড়া ছেড়ে প্রবাসে ছিলেন। সেখান থেকে ফিরে তিনি মুরগির ব্যবসায় সম্পৃক্ত হন। মহানগর সভাপতি সুদীপ জ্যোতি এষ সিলেট কোর্টে মুহুরি হিসেবে চাকরি করছেন। সাধারণ সম্পাদক আহসান বিএনপির বড় এক নেতার ভাগ্নে। ২০০৩ সালে তিনি ছাত্রলীগ থেকে ছাত্রদলে যোগদান করেন। এরপরে তিনি প্রবাসে চলে যান। সম্প্রতি দেশে ফিরে তীর নামক জুয়া খেলা পরিচালনা করেন তিনি। সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা এ চারজনই অযোগ্য। গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে তাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের নেতারা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেন। পাশাপাশি মুক্তি না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ারও ঘোষণা দেন।