মামলাটি শুনানির জন্য সরকার ব্যতিব্যস্ত হয়ে গেছে : জয়নুল আবেদীন
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন বলেছেন, খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে সরকার খুব ব্যতিব্যস্ত হয়ে গেছে। খালেদা জিয়ার জামিন হলে সেই জামিনকে কীভাবে রোধ করবে সেটা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত মামলা, সেই মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। সেই মামলাটি শুনানি করার জন্য সরকার ব্যতিব্যস্ত হয়ে গেছে।
আজ মঙ্গলবার জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার আপিল শুনানির বিষয়ে নতুন দিন ধার্য করার পর সাংবাদিকদের এক প্রতিক্রিয়ায় জয়নুল আবেদীন এসব কথা বলেন।
জয়নুল আবেদীন বলেন, আমরা আগেও বলেছি, এখনো বলছি, যেখানে লাখ লাখ আপিল পেন্ডিং, যেখানে ডেথ রেফারেন্স পেন্ডিং, সমস্ত মামলা রেখে সরকার এই মামলাটি শুনানি করতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে গেছে। তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন, অ্যাটর্নি জেনারেল কত উৎসুক। এ রকম যদি সরকারের পক্ষে উনি সব আপিল, ডেথ রেফারেন্সে শুনার জন্য উপস্থিত থাকতেন, তাহলে আমরা বুঝতাম, না তিনি প্রকৃতপক্ষে দেশের মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন এবং কাজ করতে চান। এখন তিনি শুধু খালেদা জিয়ার মামলা শুনানি করার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে যান।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী বলেন, মামলাটি শুনানির জন্য ছিল, গতকাল আমরা একটি লিখিত আবেদন করে মামলাটি শুনানি মুলতবির জন্য আবেদন করেছি। কেন মুলতবি চেয়েছি এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, যে আদেশটি আপিল বিভাগ দিয়েছে সেই আদেশটির একটি অংশ নিয়ে আমরা একটি রিভিউ আবেদন করেছি। সেটি হচ্ছে এই যে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপনি নিষ্পত্তি করতে বলছেন সেটা যথাযথ হয়নি।
৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করার আদেশের বিষয়ে জয়নুল আবেদীন বলেন, এই আদেশটা যদি থাকে তাহলে অরাজকতা তৈরি হবে। এজন্য আমরা রিভিউ আবেদনটি করেছি। সেই আবেদনের শুনানি পর্যন্ত আমরা মুলতবি চেয়েছি। আদালত আমাদের আবেদন শুনেছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল কতগুলো অবাস্তব আরগুমেন্ট করেছেন। একটি খুব আপত্তিকর কথা বলেছেন যে, আমরা এই মামলাটা শুনানি করতে চাই না। এটা আমরা আপত্তি দিয়েছি। আদালত সব কিছু পর্যাবেক্ষণ করেছেন। উভয়পক্ষের আরগুমেন্ট শুনেছেন। আমাদের আবেদনটি নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন। এটা খারিজ করে দেননি। আগামী রোববার দুপুর ২টা পর্যন্ত এই মামলাটি স্থগিত করেছেন।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি বলেন, এই সময়ের মধ্যে আপিল বিভাগ যদি কোনো আদেশ দেন, পরবর্তীতে আদালতে আমরা দেব। ওই দিন যদি নতুন কোনো কারণ উদ্ভাবন হয় তখন সেটা দেখা যাবে। তিনি বলেন, আজকে কোনো শুনানি হলো না। আগামী রোববার আবার শুনানি।
জয়নুল আবেদীন বলেন, খালেদা জিয়ার মামলার নিয়ে এক দিকে জামিনের আদেশ দেন। সেটা আবার উনারা স্থগিত করেন। এটা কোন দেশে কোন যুগে আছি আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে খালেদা জিয়ার আইনজীবী বলেন, ১/১১ এর কথা আপনাদের মনে আছে, সেই সময় যে অবস্থায় চলত, আমরা তার চেয়েও শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার মধ্যে আছি। এটাও ইনশা আল্লাহ কেটে যাবে।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাজা বাড়াতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের ওপর শুনানির জন্য ৮ জুলাই দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট। একই দিন সাজার রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিলের ওপর শুনানি হবে।
আজ মঙ্গলবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন। আজ উভয় আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য থাকলেও খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আপিল শুনানির জন্য সময় আবেদন করেন।
অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষ ও দুদক সময় আবেদনের বিরোধিতা করে শুনানি শুরুর আবেদন জানান। আদালত উভয় আবেদন নিষ্পত্তি করে ৮ জুলাই দুপুর ২টার দিকে শুনানির সময় নির্ধারণ করেন।