গাজীপুরের নির্বাচন নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে প্রতিবেদন জমার নির্দেশ
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন কেমন হয়েছে, তা যাচাই করে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তাকে আগামী সাতদিনের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ইসি ভবনে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার এই কথা জানিয়েছেন।
মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘গাজীপুরের যে সিটি নির্বাচন হয়েছে এই নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট যাঁরা ছিলেন তাঁদের কী দায়-দায়িত্ব ছিল তা চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। এটাকে আমি তদন্ত রিপোর্ট বলতে চাই না, কিন্তু সার্বিকভাবে নির্বাচন কমিশনের অবস্থান কী ছিল সেটা আমি বুঝে নিতে চাই।’
মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘গাজীপুর নির্বাচনে আমাদের কী দায়িত্ব ছিল, আমরা কী করতে পারিনি কিংবা কী করিনি তার একটি প্রতিকৃতি তুলে ধরার জন্য আমার ওপর দায়িত্ব দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি)। এবং সেটা আলোর মুখ দেখার আগ পর্যন্ত আমি বলতে পারব না, সেখানে আসলে কী হয়েছিল।’
নির্বাচন কমিশনার আরো বলেন, ‘কেন কিছু কেন্দ্রে ২০ ভাগের কম ভোট পড়ল। কেন কিছু কেন্দ্রে ৮০ ভাগের বেশি ভোট পড়ল এসব বিষয়গুলো একটি তুলনামূলক আলোচনার বৃত্তে নিয়ে আসতে চাই। গণমাধ্যমে গাজীপুর নির্বাচনের যে সব অনিয়মের চিত্র এসেছে এর সত্যতা যাচাই করতে চাই। সাংবাদিকদের দৃষ্টিতে গাজীপুর নির্বাচন কেমন ছিল তা আমরা জানতে চাই।’
মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘কিছু মিডিয়াতে যেসব তথ্য এসেছে যার মধ্যে কিছু তথ্য ভুল ছিল এবং সেগুলো চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি আসলে সেই তথ্যের তৃণমূলে গিয়ে অন্বেষণ করে দেখতে চাই সেখানে কী ঘটেছিল। গাজীপুরের যে রির্টানিং কর্মকর্তা ছিলেন তাঁকে আমি সাতদিনের সময় বেঁধে দিয়েছি। তাঁকে কিছু তথ্য- উপাত্ত দিতে বলেছি। আমার মনে হয় আগামী দিন দশেকের মধ্যে আমি একটা মোটামুটি চিত্র পেয়ে যাব এবং তা থেকে আমি চিন্তা করে দেখব, আগামী তিন সিটি নির্বাচনে কী করা উচিত আর কীভাবে করা উচিত।’
মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘গত দুটি সিটি নির্বাচনের সঙ্গে পরবর্তী তিন সিটি নির্বাচনের তুলনা হবে না। আমরা আশা করব পরবর্তী তিনটি নির্বাচন অবশ্যই সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ এবং সর্বজন গ্রহণযোগ্য হবে। সঙ্গে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করা ইসির প্রধান লক্ষ্য।’ তিনি আরো বলেন, ‘অতীতের ভুল-ভ্রান্তিগুলো চিহ্নিত করে আমরা ভবিষ্যতের পথ চলতে চাই। খুলনা কিংবা গাজীপুরে যে ধরনের নির্বাচন হয়েছে, সেখানকার বির্বাচনের যে সব ভুল-ভ্রান্তিগুলো ছিল তা আমরা চিহ্নিত করেছি এবং আগামী যে তিন সিটি (রাজশাহী, সিলেট ও বরিশাল) করপোরেশন নির্বাচন রয়েছে সেখানে অতীতে যে ভুল বা অনিয়মগুলো হয়েছে সেগুলোর যেন আর পুনরাবৃত্তি না হয় তা অবশ্যই আমরা দৃষ্টিতে রাখব।’
পুলিশ দিয়ে নির্বাচন করানোর বিষয়ে জানতে চাইলে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘মুশকিল হলো পুলিশ হলো আমাদের সহায়ক শক্তি। নির্বাচন কমিশনের তো এমন অবস্থা নেই যে কমিশনের সকল কর্মকর্তা দিয়ে আমরা নির্বাচনটা করতে পারি। পুলিশের ওপর আমাদের নির্ভরশীল হতেই হয়।’
খুলনা ও গাজীপুর নির্বাচনের মতো বাকি নির্বাচন কেন চান না- এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘নিশ্চয় সেখানে কিছু কিছু অনিয়ম বা ভুলভ্রান্তি হয়েছে। যেসব ভুল-ভ্রান্তির জন্যই সেখানে কিছু কেন্দ্র বন্ধ করা হয়েছে। আমি তো এ কথা কখনোই বলব না সেখানে ভুল-ভ্রান্তি হয়নি।’