চসিক মেয়রসহ আটজনের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নয়
কর্ণফুলী নদী রক্ষায় হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করার অভিযোগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানসহ আটজনের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না মর্মে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালত অবমাননার অভিযোগে এক আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন না করায় গত ২৫ জুন চট্টগ্রামের মেয়রসহ আটজনকে আমরা আইনি নোটিশ পাঠিয়েছিলাম। নোটিশের পরও বাস্তবায়ন বা এ-সংক্রান্ত কোনো জবাব দেওয়া হয়নি। বিষয়টি আদালতে উপস্থাপন করা হলে শুনানি শেষে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ আটজনের বিরুদ্ধে রুল জারি করেছে। রুলে তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।’
আটজন হলেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, চট্টগ্রাম পুলিশ কমিশনার, পরিবেশ অধিদপ্তরের ডিজি, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সচিব, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) চেয়ারম্যান।
এর আগে গত ২৫ জুন আদালত অবমাননার অভিযোগে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়রসহ আটজনের কাছে নোটিশ পাঠানো হয়।
নোটিশের বিষয়ে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের জানান, কর্ণফুলী নদীর তীরে অবৈধ দখল-সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন ২০১০ সালে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এই প্রতিবেদন নিয়ে জনস্বার্থে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে রিট করা হয়।
রিটের ওপর শুনানি শেষে আদালত একটি রুল জারি করেন। ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে হাইকোর্টের বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি কাশেফা হোসেনের আদালত চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তীরে থাকা দুই হাজার ১৮১টি অবৈধ স্থাপনা সরানোর নির্দেশ দেন। রায়ে ১১ দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়।
নির্দেশনায় ৯০ দিনের মধ্যে বিবাদীদের নদীর জায়গা থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা, জলাধার সংরক্ষণ আইনের ৫, ৮, ৬(ঙ), ১৫ ধারার বাস্তবায়ন করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত।
২০১৬ সালের ১৬ আগস্টের এ রায়ের অনুলিপি বিবাদীদের কাছে পাঠানো হলেও আজ পর্যন্ত কর্ণফুলী নদীর অবৈধ দখল উচ্ছেদের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাদীপক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ এ আটজনকে নোটিশ পাঠিয়ে সাত দিনের মধ্যে আদালতের রায় অনুসারে কর্ণফুলী নদীর জায়গা দখল করে নির্মিত স্থাপনা উচ্ছেদের অনুরোধ জানান।