রাজশাহী সিটি : লিটন-বুলবুলের সম্পদ ও আয় বেড়েছে
রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনে অংশ নেওয়া বড় দুই দলের প্রার্থী আওয়ামী লীগের এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের আইন পেশা থেকে কোনো আয় না থাকলেও গত পাঁচ বছরে সম্পদ বেড়েছে। আর মেয়র থাকার সময় আয় বেড়েছে বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের।
এ দুই প্রার্থী নির্বাচন কমিশনে যে হলফনামা দিয়েছেন, তা পর্যালোচনা করে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। হলফনামায় দেওয়া তথ্যমতে, মেয়র প্রার্থী লিটনের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক (বিএ)। পেশা আইনজীবী হলেও এ খাত থেকে তাঁর কোনো আয় নেই। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের নামেই তাঁর জমা আছে এক কোটি ৩৮ লাখ ৫৩ হাজার টাকা। এর আগে ২০১৩ সালের সিটি নির্বাচনের সময় লিটনের নামে ব্যাংকে জমা ছিল মাত্র ৫৮ হাজার টাকা। তারও আগে ২০০৮ সালের নির্বাচনে লিটনের হলফনামায় বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছিল দুই লাখ ৪৪ হাজার টাকা। মেয়র থাকাকালে লিটনের নামে দুই লাখ টাকা দামের নিজের নামে একটি গাড়ি ছিল। তবে এখন রয়েছে তাঁর ৩৬ লাখ টাকা দামের গাড়ি। ২০১৩ সালে স্ত্রীর কোনো স্বর্ণ না থাকলেও এখন হয়েছে ৫০ ভরি। লিটন ২০০৮ সালে আইন পেশা থেকে বার্ষিক আয় দেখান ৬০ হাজার টাকা। তবে ২০১৩ সালের সিটি নির্বাচনের হলফনামায় আইন ব্যবসা পেশা হিসেবে দেখালেও এই খাত থেকে তাঁর কোনো আয় দেখানো হয়নি। এবারের হলফনামাতেও তেমনটিই করা হয়েছে।
দাখিল করা হলফনামার সম্পদ বিবরণীতে লিটন গৃহসম্পত্তি থেকে পাঁচ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ টাকা, কৃষি খাত থেকে ১৬ লাখ, ব্যবসা থেকে ১২ লাখ, মূলধনি লাভ চার লাখ ২৩ হাজার ৮০ এবং অন্যান্য উৎস থেকে ১৯ লাখ নয় হাজার ৭০৮ টাকার বার্ষিক আয় দেখান। লিটনের নিট সম্পদের পরিমাণ দুই কোটি ৬৮ লাখ ৯৭ হাজার ১৫১ টাকা।
সম্পদের ব্যাপারে এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, ‘আমার যে সম্পদ, তার সবটুকুই বৈধ উপায়ে অর্জিত এবং সম্পদের আয়কর যথাযথভাবে পরিশোধ করেছি।’
অন্যদিকে, হত্যাসহ ১২টি মামলার আসামি বিএনপির মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুলের পেশা ব্যবসা। হলফনামা অনুযায়ী, ২০১৩ সালে নির্বাচনের সময় তাঁর ছিল ছয় লাখ ৬৫ হাজার টাকা। তবে গেল পাঁচ বছরে তা বেড়ে হয়েছে ৪২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। যদিও মাছ চাষ করে বছরে তাঁর আয় মাত্র ছয় লাখ টাকা। বুলবুলের নিজের আছে ২৫ ভরি স্বর্ণ। তাঁর নিজের কোনো বাড়ি নেই। তবে হিসাব করে দেখা যায়, ২০১৩ সালের চেয়ে এবার বার্ষিক আয় প্রায় সাড়ে ১১ গুণ বেড়েছে সদ্যবিদায়ী মেয়র বুলবুলের। বেড়েছে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণও।
হলফনামা থেকে জানা গেছে, ২০১৩ সালের নির্বাচনে মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় বার্ষিক আয় দেখান এক লাখ ৯২ হাজার টাকা। এবারের হলফনামায় বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন ২১ লাখ ৫৭ হাজার ২৬০ টাকা। এই বার্ষিক আয় মেয়রের দায়িত্বে থাকা সম্মানী থেকে আসত বলে বুলবুল তাঁর হলফনামায় উল্লেখ করেছেন।
বুলবুল বলেন, ‘মেয়রের দায়িত্ব পালনের সম্মানী থেকে আমার এ বার্ষিক আয়। আগের বছর তো মেয়র ছিলাম না। স্বাভাবিকভাবেই মেয়রের সম্মানীর ভাতা পাওয়ায় আয় কিছুটা বেড়েছে। এই আয় সম্পূর্ণ বৈধ উপায়ে অর্জিত এবং এর আয়কর যথাযথভাবে পরিশোধ করেছি।’
আগামী ৩০ জুলাই রাজশাহী সিটি করপোরেশনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।