শাশুড়িকে উচিত শিক্ষা দিতে শ্যালককে হত্যা, দুজনের মৃত্যুদণ্ড
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে রিফাত (১৩) হত্যা মামলায় দুজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুরে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ১-এর বিচারক রবিউল আউয়াল এই রায় জানান।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা হলেন নিহতের দুলাভাই মহিউদ্দিন হাসনাত ও তাঁর সহযোগী সাইফুল ইসলাম।
মামলার অতিরিক্ত রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ফজলুর রহমান বলেন, দুলাভাই মহিউদ্দিন হাসনাত শ্যালক রিফাতকে অপহরণ করে সিদ্ধিরগঞ্জে নিয়ে নাভানা ভূঁইয়া সিটিতে হত্যা করেন। এরপর তিনি আত্মগোপন করেন। পরে পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করলে, ২০১২ সালের ২৬ আগস্ট তিনি ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। জবানবন্দিতে তিনি অকপটে স্বীকার করেন যে, শাশুড়ির সঙ্গে তাঁর ঝগড়ার কারণে, তাঁকে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্য, তার ছেলে আশিকুর রহমান রিফাতকে কৌশলে ডেকে নিয়ে অন্যান্য সহযোগীদেরসহ সিদ্ধিরগঞ্জে নিয়ে হত্যা করে। এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে তারা ১৩ জনকে আদালতে হাজির করেন। আসামিপক্ষ থেকে তিনজনের সাফাই সাক্ষী দেওয়া হয়েছে। আদালত এই সাক্ষীদের ভিত্তিতে দুই আসামিকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুর আদেশ দেন।
নিহত ছেলের ছবি হাতে বাবা তফাজ্জল হোসেন। ছবি : এনটিভি
২০১২ সালের ৮ আগস্ট রাজধানীর মিরপুর এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তফাজ্জল হোসেনের ছেলে রিফাতকে তার দুলাভাই মহিউদ্দিন ও তার সহযোগী সাইফুল ইসলাম অপহরণ করে নিয়ে যান। এরপর তারা মুক্তিপণ দাবি করেন। কিন্তু মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে রিফাতকে তারা গলা কেটে হত্যা করেন। এরপর ১০ আগস্ট সিদ্ধিরগঞ্জের নাভানা সিটি থেকে শিশুটির হাত পা বাঁধা গলাকাটা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
১২ আগস্ট পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করে। পরে রিফাতের লাশের ছবি দেখে তাকে শনাক্ত করে স্বজনরা। নিহতের বাবা নিজের মেয়ে জামাই মহিউদ্দিন হাসনাতকে সন্দেহ করলে ২৬ আগস্ট পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।
নৃশংস এই হত্যা মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হয় ২০১৩ সালের ২ মার্চ। তবে, দ্বিতীয় আসামি সাইফুল এখনো পলাতক রয়েছেন।