গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে বিএনপিরও দায়িত্ব রয়েছে : তোফায়েল
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘দেশের নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। দেশের সব রাজনৈতিক দল এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনে বিএনপিরও দায়িত্ব রয়েছে।’
আজ রোববার দুপুরে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।
এর আগে বাণিজ্যমন্ত্রী ঢাকায় সফররত এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের পররাষ্ট্র এবং কমনওয়েলথ বিষয়ক ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী মার্ক ফিল্ডের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে সব দলের অংশ গ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে, এটা সবার প্রত্যাশা। এজন্য বিএনপিসহ সব রাজনৈতিক দলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। বিএনপি বিগত জাতীয় নির্বাচনে অংশ না নিয়ে ভুল করেছে। বিএনপির সামনে নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। পরপর দুইবার জাতীয় নির্বাচনে অংশ না নিলে একটি রাজনৈতিক দলের রেজিস্ট্রেশন থাকে না। আমার বিশ্বাস, বিএনপি এ ঝুঁকি নিবে না। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির উচিত হবে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা। বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে অস্তিত্ব সংকটে পড়বে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ‘ব্রিটেনের প্রায় দুই শতাধিক কোম্পানি বাংলাদেশে কাজ করছে, বিনিয়োগের পরিমাণও অনেক। ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর (ব্রেক্সিটের পর) বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য আরো বাড়বে। বর্তমানে উভয় দেশের বাণিজ্য প্রায় চার বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ব্রিটেন বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম রপ্তানি বাজার।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হলে ব্রিটেন বাংলাদেশকে জিএসপি প্লাস সুবিধা প্রদান করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ জন্য বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করেছে। ব্রিটেনও বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে আগ্রহী। বাংলাদেশ আশা করছে, ব্রেক্সিটের পর ব্রিটেনের সঙ্গে বাণিজ্য আরো বৃদ্ধি পাবে ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরো জোরদার হবে।’
তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ বর্তমানে ৪২তম অর্থনীতির দেশ। ২০৩০ সালে বাংলাদেশ ২৮তম দেশে পরিণত হবে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক উন্নয়নের রোল মডেল। বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ নিজ অর্থায়নে বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক বিনিয়োগ না করতে চাইলে, বাংলাদেশ নিজ অর্থায়নেই পদ্মা সেতু নির্মাণ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের বাজেট এখন আর বিদেশি সাহায্যের ওপর নির্ভর নয়।’
ব্রিটিশমন্ত্রী মার্ক ফিল্ড বলেন, ‘প্রতিবেশী রাষ্ট্র মিয়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মহতি কাজ করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বাংলাদেশ মানবতার জন্য বড় কাজ করেছে। এজন্য ব্রিটেন বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছি এবং বাস্তবচিত্র দেখেছি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বাংলাদেশের পাশে আছে। এ বিষয়ে ব্রিটেন সব ধরনের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।’
মার্ক ফিল্ড বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্রিটেনের বন্ধু রাষ্ট্র। উভয় দেশের বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক মানুষ ব্রিটেনে বাস করে। অনেকেই পড়ালেখা করছে। উভয় দেশের সম্পর্ক শক্ত অবস্থানে রয়েছে। ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসার পরও উভয় দেশের চলমান বাণিজ্য অব্যাহত থাকবে এবং আরো বৃদ্ধি পাবে।’
এ সময় বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু, ব্রিটেনের জেন্ডার সমতা বিষয়ে স্পেশাল রিপ্রেজেনটেটিভ ফরেন সেক্রেটারি জোয়ান্না রিপার, ঢাকায় ব্রিটিশ ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনার কানবার হুসেইন বরসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।