ইসির প্রতি বিএনপির আস্থা আছে
নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. রফিকুল ইসলাম বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা আছে বলেই বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। যদি আস্থা না থাকতো, তাহলে তো তারা নির্বাচনে আসত না।
আজ শনিবার দুপুরে রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও সহায়ক কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কর্মশালা শেষে এসব কথা বলেন রফিকুল ইসলাম।
রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি ধরে নিচ্ছি যেহেতু বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে, সেহেতু কমিশনের প্রতি তাদের আস্থা আছে। আর বাদ বাকিটা হচ্ছে, তাদের নির্বাচনী কৌশল।
খুলনা ও গাজীপুর সিটি নির্বাচনে নানা অনিয়মের ঘটনায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের উদ্বেগে উল্টো প্রশ্ন তুলেছেন নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের ফেরিওয়ালা আমেরিকার নির্বাচন কি সুষ্ঠু হয়েছে? আমেরিকার নির্বাচন নিয়ে তো সিনেট তদন্ত করছে। তাহলে সে দেশের রাষ্ট্রদূত আমাদের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলেন কিভাবে?
নির্বাচন কমিশনার বলেন, রাজশাহী সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সব ধরনেরই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের প্রয়োজন নেই জানিয়ে তিনি বলেন, রাজশাহী সিটির ছয়টিরও বেশি কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা হবে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় এখানে গত সিটি নির্বাচনের মতোই সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে সিসি ক্যামেরার ব্যবস্থা থাকবে। গ্রহণযোগ্য ও আইনানুগ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষ থেকে সব ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।
রফিকুল ইসলাম বলেন, গাজীপুর ও খুলনার কিছু এলাকায় আইনানুগ নির্বাচন করার পরিবেশ বিঘ্নিত হয়েছিল, ফলে সেগুলোতে ভোটগ্রহণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ সৃষ্টি হলে নির্বাচন সম্পন্ন করা হয়েছে। এই অবস্থাকে যতটুকু কমানো যায়, রাজশাহীতে সেই চেষ্টা করা হবে। আইনানুগ পরিবেশ বিঘ্নিত হলে ভোটগ্রহণ বন্ধ করা হবে, তবে সেই পরিবেশ যেন সৃষ্টি না হয়, আমরা সেই চেষ্টাই করব।
নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত স্থানীয় সরকারের কোনো নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়নি। রংপুর সিটি করপোরেশনে সব মহলের কাছে গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজশাহীসহ অন্য তিন সিটিতে তাই হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, রাজশাহী সিটির তিন লাখ ভোটারের জন্য সেনা মোতায়নের প্রয়োজনীতা আছে বলে আমি মনে করি না, কমিশনও তা মনে করে না। তবে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যদি কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, তাহলে অবশ্যই সেনাবাহিনী মাঠে নামবে।
নির্বাচন চলাকালে বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করতে কোনো বাধা নেই। সে হোক বিএনপি বা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। তবে আমাদের সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা আছে, সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী ছাড়া অন্য কাউকে গ্রেপ্তার করে হয়রানি করা হলে সেই পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় দল, মত ও ভয়-ভীতির ঊর্ধ্বে থেকে সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে সুষ্ঠুভাবে রাসিক নির্বাচনে কাজ করে যাওয়ার জন্য নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন নির্বাচন কমিশনার।
রাসিক নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা সৈয়দ আমিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে কর্মশালায় অন্যান্যের মধ্যে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।