গাজীপুরে বিএনপি কৌশলগত কারণে প্রতিরোধ গড়েনি
গাজীপুর ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ করলেও বিএনপি ‘কৌশলগত কারণে’ কোনো প্রতিরোধ গড়েনি বলে মন্তব্য করেছেন দলটির নীতি-নির্ধারণী ফোরাম স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
আজ শনিবার দুপুরে ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক এ মেয়র বলেন, ‘গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচনে সরকার কারচুপি করে বিজয়ী হয়েছে। তফসিল ঘোষণার পরপর বিএনপি নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, হুমকি-ধমকি দিয়ে এলাকাছাড়া করেছে। বিএনপি কৌশলগত কারণে এসব প্রতিরোধ করেনি। তবে আগামীতে প্রতিরোধ করা হবে।’
আজ শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি হলে ‘চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আওয়ামী লীগ ও পুলিশ র্যাব কর্তৃক গুম-খুন ও নির্মম নির্যাতনের শিকার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান’ অনুষ্ঠানে মির্জা আব্বাস এসব কথা বলেন। এ আর্থিক সহায়তা প্রদান করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী হেল্প সেল।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এবার তারা ছয়টি পরিবারকে ৫০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে। এর আগে বিগত আন্দোলনে ভূমিকা রাখতে গিয়ে গুম-খুন-পঙ্গু হওয়া ১২৪টি পরিবারকে ৬১ লাখ ৬৪ হাজার ৫০০ টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে।
‘খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচন গাজীপুরের মতো হবে’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘অনেকে বলেন, বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া দরকার। আমিও তাদের সঙ্গে একমত। তবে বিএনপির নির্বাচনে যাওয়া দরকার, তার চেয়েও বেশি দরকার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা। খালেদা জিয়া ছাড়া নির্বাচন গাজীপুর-খুলনা সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের মতো হয়ে যাবে। তাই আমি বলব, যাঁরা নির্বাচনে যেতে চান তাঁরা আগে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার ব্যবস্থা করেন। তাঁকে নিয়ে নির্বাচনে যাব। খালেদা জিয়াকে নিয়ে নির্বাচনে যাবোএবং তাতে বিএনপি বিজয়ী হবে, কেউ ঠেকাতে পারবে না।’
বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মধ্যে বিএনপি-ভীতি কাজ করছে। তারা খালেদা জিয়াকে ভয় পায়। আওয়ামী লীগ ভীতিগ্রস্ত তারেক রহমান কখন দেশে চলে আসেন। আওয়ামী লীগ বিষধর সাপ। তারা মনে করে, বাংলাদেশের সব মানুষ তাদের শত্রু। মানুষ তাদের শত্রু ছিল না। তাদের অপশাসন, দুর্নীতি আর লুটপাটের কারণে শত্রু হয়ে গেছে।’
‘বিএনপির আন্দোলনে লিস্ট বাতাসে উড়ে যাবে’
মির্জা আব্বাস বলেন, আজকে বাংলাদেশে ঘরে ঘরে স্বজনহারা মানুষের কান্নার রোল। আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাই গুম হওয়া নেতাকর্মীদের ফিরিয়ে দিন। আর খুনের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের ব্যবস্থা করুন।
‘বিএনপি কোনো কাপুষের দল না। বিএনপি একজন মুক্তিযোদ্ধা সাবেক প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের গড়া দল। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ১৯৭১ সাল থেকে আন্দোলন-সংগ্রাম করে আসছেন। আর এ কারণেই সরকার প্রতিহিংসায় খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে নিয়ে নির্যাতন করছে।’
বিএনপির এ নেতা আরো বলেন, ‘শুনছি, এখন নাকি আবার বিএনপি নেতাকর্মীদের লিস্ট করছে। এসব লিস্ট-ফিষ্ট দিয়ে কাজ হবে না। বিএনপির আন্দোলনে লিস্ট বাতাসে উড়ে যাবে। যারা জেলে আছেন তারা অত্যন্ত মানবেতর জীবনযাপন করছেন। জেলখানায় একজন সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে যায়। সেখানে খালেদা জিয়াকে একটি অসত্য মিথ্যা মামলায় কারাদণ্ড দিয়ে বন্দি করে রাখা হয়েছে। খালেদা জিয়াকে কোনো অবস্থাতেই সেখানে রাখা যায় না। তিনি অসুস্থ। কিন্তু মনোবল ভাঙ্গেনি।’
জাতীয়তাবাদী হেল্প সেলের সদস্য আরাফাতুল রহমান আপেলের সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য দেন বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সহ-স্বনির্ভরবিষয়ক সম্পাদক নিলুফার চৌধুরী মনি, যুবদল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মওলা শাহীন, ছাত্রদলের রাজিব আহসান পাপ্পু, জাতীয়তাবাদী হেল্প সেলের সমন্বয়ক সুমন আহসানসহ গুম-খুন হওয়া পরিবারের সদস্যরা।