সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, অন্য কারো পরামর্শে নয় : কাদের
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় এমন মন্তব্য থেকে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। তাহলে বিদ্যমান বন্ধুত্বের সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকার কেরানীগঞ্জে কলাকান্দি এলাকায় ঢাকা-ভাঙ্গা চার লেন সড়কের কাজ পরিদর্শন করার সময় কাদের এসব কথা বলেন।
নির্বাচন নিয়ে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, ‘বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে এটা অন্য কারো পরামর্শে নয়; এটি আমাদের নিজেদেরই দায়িত্ব। আমাদের সংবিধান অনুযায়ী আমাদের নির্বাচন কমিশন স্বাধীন কর্তৃত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করবে। আমি এখানে একটা কথা বলতে চাই, কোনো প্রকার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত না করে আমি শুধু এটুকুই বলব, আমাদের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরাজমান যেই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক, সেই সম্পর্ক যেন ক্ষুণ্ণ বা ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং উভয় দেশের জনগণের মধ্যে কোনো প্রকার বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি না করে, সে ব্যাপারে যেকোনো রকম আচরণ বা মন্তব্য দেওয়ার সময় আমাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে, বন্ধুত্বের স্বার্থে। আমরা কিন্তু পৃথিবীর অন্য কোনো দেশের নির্বাচন নিয়ে, অভ্যন্তরীণ ব্যাপার নিয়ে কোনো কথা, কোনো দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য আমরা কখনো দিই না।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, ‘আজকে শুধু এটুকুই বলব, আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ যে সম্পর্ক আছে, সেটা বজায় থাকুক, এটা আমরা চাই। আমাদের উভয় দেশের জনগণই বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয় এ ধরনের আচরণ এবং উচ্চারণ পারস্পরিক স্বার্থে আমাদের কারো পক্ষেই ভালো হবে বা শুভ হবে বলে আমি মনে করি না।’
এ সময় মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে প্রশ্ন করে ওবায়দুল বলেন, ‘প্রতিদ্বন্দ্বী দলের একজন কেন্দ্রীয় নেতার নেতৃত্বে নির্বাচন বানচালের জন্য যে নাশকতার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, সেটা নিয়ে কি কোনো উদ্বেগ নেই?’
চলতি বছরের অক্টোবরে ঢাকা-ভাঙ্গা চার লেন প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন বলেও জানান মন্ত্রী। পদ্মা সেতু নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ৫৬ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
আজকে পদ্মা সেতুর ৫ নম্বর স্প্যান ৪১ ও ৪২ পিলারে ওঠানো হবে। আবহাওয়া ভালো থাকলে বিকেল ৩টার মধ্যে স্প্যান বসবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সেনাবাহিনীর ইএমসি ইঞ্জিনিয়ারিং চিফ মেজর জেনারেল সিদ্দিকুর রহমান।
গতকাল বৃহস্পতিবার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের অনিয়মের অভিযোগের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাট। তিনি বলেন, এসব স্থানীয় নির্বাচনই মূল নির্দেশক হিসেবে কাজ করবে জাতীয় নির্বাচন কেমন হবে, তা বোঝার জন্য।
বার্নিকাট বলেন, ‘গাজীপুর সিটি নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করার যেসব অভিযোগ এসেছে, সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র উদ্বিগ্ন। এসব অভিযোগের মধ্যে আছে ব্যালট বাক্স ভরে দেওয়া, ভোটের দিন ও আগে পোলিং এজেন্ট এবং রাজনীতি সংশ্লিষ্টদের ভয়ভীতি দেখানো। নির্বাচনের সপ্তাহে বিরোধী রাজনীতিবিদ ও কর্মীদের যেভাবে পুলিশি হয়রানি গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সে ব্যাপারেও আমরা আরো উদ্বিগ্ন। জনগণের চাওয়া অনুযায়ী সরকার দেশে অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার ব্যাপারে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। আমরা দেখতে চাই, সরকার তার প্রতিজ্ঞা রাখতে চায়।’
রাষ্ট্রদূত আরো বলেন, ‘মত প্রকাশের স্বাধীনতা, শক্তিশালী গণমাধ্যম, শান্তিপূর্ণ উপায়ে মিছিল-মিটিং করার অধিকার এবং সেইসঙ্গে অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বাংলাদেশের ধারাবাহিক ও টেকসই প্রবৃদ্ধির জন্য অত্যন্ত প্রয়োজন।’