নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে হাসিমুখেই ফিরলেন ভোটাররা
স্থানীয় সরকার নির্বাচনে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকে ভোট দিলেন গাজীপুর মহানগরীর মানুষ। ওই মহানগরীরই কিছু ভোটার ভোট দিলেন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম)। দুই অভিজ্ঞতাই গাজীপুর সিটির জন্য একেবারে নতুন। ওই নির্বাচনকে ঘিরে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ।
আজ মঙ্গলবার ভোটাররা আনন্দঘন ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দেন। প্রথমবারের মতো ভোট দিতে আসা ভোটারদের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনা বেশি লক্ষ করা গেছে। কাঙ্ক্ষিত প্রার্থীকে ভোট দিয়ে হাসি মুখে বাড়ি ফেরেন ভোটাররা।
মঙ্গলবার সকালে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় হালকা বৃষ্টিপাত হয়। এতে প্রার্থী, কর্মী-সমর্থক ও ভোটারদের মাঝে কিছুটা হতাশা দেখা যায়। তবে অল্প সময় পরই বৃষ্টি থেমে যায়, কেটে যায় হতাশা।
সকাল ৮টা বাজা মাত্রই শুরু হয় কেন্দ্রগুলোতে ভোটারদের উপস্থিতি। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই উপস্থিতি বাড়তে থাকে। বিশেষ করে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক থাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের তেমন দুর্ভোগ পোহাতে হয়নি। দুপুর পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার জন্য ভোটাররা প্রখর রোদ ও গরম উপেক্ষা করে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করতে থাকেন। দুপুরে কিছুটা বিরতি দিয়ে বিকেলেও ভোটাররা সারিবদ্ধ হয়ে ভোট প্রদান করেন। দীর্ঘ অপেক্ষার পর ভোট প্রদান করে হাসিমুখে তাঁদের বাড়ি ফিরে যেতে দেখা গেছে।
ভোটগ্রহণ উপলক্ষে পুরো নির্বাচনী এলাকাকে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ছাড়া ছিল ভ্রাম্যমাণ আদালত।
দুই চারটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া কোথাও তেমন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায়নি।
প্রথমবারের মতো ইভিএম
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দেওয়ার অভিজ্ঞতা হলো গাজীপুরবাসীর। প্রথম বারের মতো ওই যন্ত্র দেখলেন ও এর মাধ্যমে ভোট দিলেন তাঁরা।
ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দিতে পারায় শিক্ষিত ভোটারদের অধিকাংশই বেশ খুশি। তাঁরা ইভিএম পদ্ধতিকে সমর্থন জানিয়েছেন। তবে স্বল্প শিক্ষিত ভোটাররা এ পদ্ধতিকে জটিল বলে মন্তব্য করেছেন।
গাজীপুর সিটিতে ৪২৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ছয়টি কেন্দ্রে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হয়। এলাকার শিক্ষার হারকে বিবেচনা করে এ কেন্দ্রগুলো বাছাই করে নির্বাচন কমিশন।
গাজীপুর জেলা শহরের রাণী বিলাসমণি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট প্রদান করার পর কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আগের পদ্ধতির তুলনায় ইভিএম আনেক ভালো এবং ভোট দেয়াও সহজ। এ পদ্ধতিতে ভোট করাচুপির সুযোগও কম। আগের পদ্ধতির মতো কোনো ঝামেলা নেই। আগের পদ্ধতিতে ব্যালট পেপারে সিল মারতে গেলে বা ব্যালট পেপার ভাঁজ করতে গেলে ভোট নষ্ট হতো, কিন্তু ইভিএম পদ্ধতিতে সেই সমস্যা নেই।’
এদিকে স্বল্পশিক্ষিত এক ভোটার ইভিএম পদ্ধতিকে কিছুটা জটিল বলে মন্তব্য করে বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে ফিঙ্গার প্রিন্টের সঙ্গে মিল না হওয়ায় ভোট দিতে জটিলতা দেখা দেয়। অনেকে এ পদ্ধতিটি বুঝতে না পেরে ভোট না দিয়েই ফিরে গেছেন।’