প্রথমে পুলিশের আঘাত, পরে ট্রাকচাপায় চিকিৎসকের মৃত্যু
ট্রাফিক পুলিশের লাঠির আঘাতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, পরে ট্রাকের চাপায় এক মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার সকালে নওগাঁ শহরের বাইপাস ইকড়তাড়া গ্রামের নওগাঁ-বগুড়া সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত মোটরসাইকেল আরোহীর নাম ডা. আসাদুল ইসলাম (৪২)। তিনি নওগাঁর প্রত্যাশা নামের একটি ক্লিনিকের মালিক।
পরে ওই পুলিশ সদস্যের শাস্তির দাবিতে এলাকাবাসী প্রায় দুই ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে রাখে। তবে, ওই ট্রাফিক পুলিশ সদস্যের নাম বা পদ জানা যায়নি।
জানা যায়, সকালে নওগাঁ শহরের বাইপাস সড়ক দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে ডা. আসাদুল ইসলাম সান্তাহারের দিকে যাচ্ছিলেন। তিনি ইকড়তাড়া গ্রামের নওগাঁ-বগুড়া সড়কে পৌঁছালে ওই ট্রাফিক পুলিশ সদস্য তাঁকে থামতে সংকেত দেন। কিন্তু তিনি থামার আগেই ওই পুলিশ সদস্য আসাদুল ইসলামের বাঁ হাতে লাঠি দিয়ে আঘাত করেন। এতে ডা. আসাদুল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ডান পাশে চলে যান। এ সময় পেছন থেকে আসা একটি ট্রাক তাঁকে চাপা দিলে পেছনের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান।
এরপর বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী প্রায় দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে থানা পুলিশ ওই ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে, নওগাঁ ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট লাশ উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাই ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। এই আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে অবরোধ তুলে নেয় এলাকাবাসী।
বিক্ষুব্ধ কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, শহরের বাইপাস ব্রিজ মোড় থেকে নওগাঁ-বগুড়া সড়কের বিজিবির মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার সড়ক পার হতে পুলিশ ও দালালদের কাছে প্রায় ৫০০ টাকা দিতে হয়। ভোর থেকে পুলিশ সদস্যরা এসে রাস্তায় বসে থাকেন। আর পুলিশের কিছু দালাল টাকা তুলতে সহযোগিতা করেন। তারা এই এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ট্রাফিক পুলিশ না থাকা এবং চাঁদা ওঠানো বন্ধ করার দাবি জানান।
ওসি আব্দুল হাই বলেন, সকালে ডা. আসাদুল সান্তাহার থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে নওগাঁ যাওয়ার সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে সরাসরি ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় এলাকাবাসী ট্রাফিক পুলিশকে দায়ী করছে। পুলিশ জড়িত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ছাড়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন নওগাঁর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাশিদুল হক, সদর সার্কেল লিমন রায়, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুশতানজিদা পারভীন। বর্তমানে সেখানকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।