রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে অনশনে শিক্ষকরা
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির দাবিতে আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীরা। প্রখর রোদ বা ভারী বৃষ্টি উপেক্ষা করে নিজেদের দাবিতে অনড় রয়েছেন তাঁরা।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দ্বিতীয় দিনের মতো আমরণ অনশন করছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা।
এ বিষয়ে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারী ফেডারেশনের সহসভাপতি শফিকুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছিলাম,২৪ জুনের মধ্যে আমাদের দাবি মেনে নেওয়া না হলে ২৫ জুন থেকে আমরা আমরণ অনশনে বসব। সেই ঘোষণা অনুযায়ী গত সোমবার সকাল ১০টা থেকে আমরণ অনশনে বসেছি। যত ঝড় তুফান আসুক না কেন, আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা অনশন চালিয়ে যাব।’
এদিকে দ্বিতীয় দিনের অনশনে চারজন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে জানান এই শিক্ষক নেতা। তিনি জানান, অসুস্থ হয়ে পড়া শিক্ষকদের আশপাশের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমরণ অনশনরত কোনো শিক্ষকের মৃত্যুর দুঃসংবাদ শোনার আগেই দাবি মেনে নেওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
গত ১০ জুন থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ব্যানারে রাস্তায় অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন তাঁরা।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ ড. বিনয় ভূষণ রায় সাংবাদিকদের বলেন, সারাদেশের নন এমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা উন্নয়ন বঞ্চিত অবস্থায় জীবন যাপন করছেন। গত ১২ জুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল-কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিওর নীতিমালা ২০১৮ জারি করা হয়েছে। এই নীতিমালা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান অনুমতি ও স্বীকৃতির সময় আরোপিত শর্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। ২০১৮-১৯ বাজেটে নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির জন্য বরাদ্দের কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণা নেই। যার ফলে নন-এমপিও শিক্ষক কর্মচারীরা অত্যন্ত হতাশ ও আশাহত হয়ে পড়েছেন।
এর আগে এমপিওভুক্তির দাবিতে নন এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার কর্মসূচি শুরু করেন। নন-এমপিও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক-কর্মচারী ফেডারেশনের ডাকে টানা ওই অবস্থান ও অনশনের একপর্যায়ে গত ৫ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তার তৎকালীন একান্ত সচিব সাজ্জাদুল হাসান সেখানে গিয়ে আশ্বাস দেন।
এরপর শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন। পরে সরকারের বিভিন্ন পর্যায় থেকে বলা হয়েছে— আসন্ন অর্থবছরে নতুন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হবে।
কিন্তু অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরের যে বাজেট প্রস্তাব করেছেন, সেখানে নতুন এমপিওভুক্তির বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি।
এবারের বাজেটে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুই বিভাগের জন্য ৫৩ হাজার ৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে। এটি প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে খাতওয়ারি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ। বাজেট বরাদ্দে প্রাথমিক বিদ্যালয়, কারিগরি প্রতিষ্ঠান ও অবকাঠামো নির্মাণে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।