শতাধিক কেন্দ্রে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী অভিযোগ করেছেন, সকাল থেকে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে শতাধিক ভোটকেন্দ্রে বিএনপির এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। জাল ভোট, মারধর ও ভোট জালিয়াতির মহোৎসব চলছে। বিএনপি এজেন্টদের নজিরবিহীনভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আজ সকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির এবা নেতা বলেন, ‘শতাধিক ভোটকেন্দ্রে আপনার দখল, জাল ভোট, সিল মারার মহা উৎসব চলছে। একেবারে মহা উৎসব চলছে। এবং এজেন্ট বের করে দেওয়া, অস্ত্রের মুখে পুলিশের হুমকির মুখে পুলিশের বাধার মুখে নানাভাবেই এটা চলছে, শতাধিক…।’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘পুলিশ আওয়ামী ক্যাডারের ভূমিকা অবতীর্ণ হয়েছে। তাদের উপস্থিতিতে বিএনপির এজেন্ট বের করে দিয়ে সরকারি দলের প্রার্থীর পক্ষে নৌকা প্রতীকে সিল মারছে। ভোটার উপস্থিতি থাকলেও বলা হচ্ছে ভোট হয়ে গেছে।’
আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে এ সিটি করপোরেশনের ভোট শুরু হয়। ভোট চলবে একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এই নির্বাচনে ৪২৫টি কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। মোট সাত মেয়র প্রার্থীর পাশাপাশি ২৫৪ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ৮৪ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আরো প্রার্থী থাকলেও গাজীপুর সিটির মেয়র পদে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হলেন আওয়ামী লীগের (নৌকা) মনোনীত জাহাঙ্গীর আলম ও বিএনপির (ধানের শীষ) মনোনীত হাসান উদ্দিন সরকার। সকালে নগরীর বশিরউদ্দিন উদয়ন একাডেমি স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেন বিএনপির প্রার্থী। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম নগরীর কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন।
ভোট দিয়ে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিএনপি মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার অভিযোগ করেন, '১০ থেকে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সকালবেলা। এজেন্টদের পুলিশ মাইরা মাইরা বের করে দিচ্ছে।’ তবে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদিত্দন মণ্ডল কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি বলে জানান।
তবে বেলা ১১টার দিকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী জানান, অভিযোগ লিখিতভাবে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। আজকের সংবাদ সম্মেলনে মূলত গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়েই কথা বলেন বিএনপির এই নেতা।
‘ইসি ভাঙা হাঁড়ি’
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব অভিযোগ করেন, ‘ভাঙা হাঁড়ি কখনো জোড়া লাগে না। নির্বাচন কমিশন একটি ভাঙা হাঁড়ি। আমরা তাদের কাছে যতই অভিযোগ করি, তাতে কোনো কাজ হবে না। কোনো কিছুই এদের কানে যায় না। ভাঙা হাঁড়ি যেমন জোড়া লাগে না, নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ করেও তেমন কোনো প্রতিকার হয় না।’
সরকারের সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সরকারের অবস্থা হচ্ছে কয়লার মতো। কয়লা ধুলে যেমন ময়লা যায় না, ঠিক এদের স্বভাবও কখনো বদলায় না। এরা মরলেও স্বভাব পরিবর্তন করবে না। ’৭৫-এ এরা একদলীয় শাসন কায়েম করে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। এবারও একই কায়দায় বাকশালী শাসন কায়েম করেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, আহমদ আজম খান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, আবদুস সালাম আজাদ, সহপ্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন।