প্রধানমন্ত্রীর বিমানে ত্রুটি, তিনজনের জামিন
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানে ত্রুটির ঘটনায় দায়ের করা দায়িত্বে অবহেলার মামলায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের প্রকৌশলীসহ তিনজনের জামিন দিয়েছেন আদালত।
আজ সোমবার ঢাকার মহানগর হাকিম প্রণব কুমার হুই এ আদেশ দেন।
ঢাকার অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশ বিভাগের উপকমিশনার আনিসুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে জানান, আজ আসামি ঢাকা মহানগর হাকিমের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক আসামিদের জামিন মঞ্জুর করেন।
আনিসুর রহমান জানান, জামিনপ্রাপ্তরা হলেন- বিমানের ইঞ্জিনিয়ার অফিসার নাজমুল হক, জুনিয়র টেকনিশিয়ান সিদ্দিকুর রহমান ও জুনিয়র টেকনিশিয়ান শাহ আলম।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, গত ১৫ মে আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২৮৭ নন প্রসিকিউশন মামলাটি করেন পুলিশ। ওই দিন সিএমএম আদালত মামলাটি গ্রহণ করে আসামিদের আজ হাজির হতে সমন জারি করেন।
গত ৪ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানে ত্রুটির প্রধান মামলায় ১১ আসামিকে অব্যাহতি দেন আদালত। তবে অব্যাহতি পাওয়া আসামিদের মধ্যে ওই তিনজনের দায়িত্বে অবহেলার কারণে দণ্ডবিধির ২৮৭ ধারায় নন প্রসিকিউশন দাখিলের অনুমতি দেওয়া হয়।
গত বছরের ৬ ডিসেম্বর প্রধান মামলা থেকে এই তিন আসামিসহ ১১ আসামির অব্যাহতি চেয়ে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা। সাথে দণ্ডবিধির ২৮৭ ধারায় তিন আসামির বিরুদ্ধে নন প্রসিকিউশন দাখিলের অনুমতি চান।
বাকি আট আসামি হলেন- বিমানের প্রধান প্রকৌশলী (প্রোডাকশন) দেবেশ চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী (কোয়ালিটি অ্যাসুরেন্স) এস এ সিদ্দিক ও প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার (মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড সিস্টেম কন্ট্রোল) বিল্লাল হোসেন, প্রকৌশল কর্মকর্তা সামিউল হক, লুৎফর রহমান, বিমল চন্দ্র বিশ্বাস, জাকির হোসাইন ও প্রকৌশল বিভাগের কর্মকর্তা মোহাম্মদ রোকনুজ্জামান।
এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৭ নভেম্বর হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টে যাওয়ার পথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। পরে বিমানটি তুর্কমেনিস্তানের আশখাবাদে জরুরি অবতরণ করানো হয়। সেখানে ত্রুটি সারিয়ে চার ঘণ্টা পর বুদাপেস্টের উদ্দেশে রওনা দেয় বিমানটি।
ত্রুটি সারানোর সময় ওই বিমানের ইঞ্জিন অয়েলের ট্যাঙ্কের একটি নাট ঢিলা পাওয়া যায়। এর পেছনে নাশকতা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখতে ২৮ নভেম্বর পাঁচ সদস্যের কমিটি করে বিমান মন্ত্রণালয়।
ঘটনা তদন্তে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) আরো দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। এসব কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নয়জনকে বরখাস্ত করা হয়।
পরে এ ঘটনায় ওই বছরের ২০ ডিসেম্বর রাতে বিমানবন্দর থানায় মামলাটি করেন বাংলাদেশ বিমানের পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ম্যাটেরিয়াল ম্যানেজমেন্ট) অবসরপ্রাপ্ত উইং কমান্ডার এম এম আসাদুজ্জামান।