সেই গৃহপরিচারিকার লাশ মর্গে, গৃহকর্ত্রী আটক
সুফিয়া আক্তার (২০) নামের সেই গৃহপরিচারিকার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যা সন্দেহে স্থানীয়দের বাধা ও সংবাদ প্রকাশের পর তার মৃত্যুর সঠিক কারণ নিশ্চিত হতে আজ সোমবার দুপুরে লাশ মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। আর এ ঘটনায় গৃহকর্ত্রী আলেয়া বেগমকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ।
এর আগে সকালে ওই গৃহপরিচারিকাকে হত্যা করা হয়েছে সন্দেহে মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার বড়জোলা গ্রামে লাশ দাফনে বাধা দেয় স্থানীয়রা।
ওই গ্রামের রহিম মল্লিকের মেয়ে সুফিয়া ঢাকার নবীনগর এলাকায় এক সিঙ্গাপুর প্রবাসীর বাসায় কাজ করতেন।
স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, দুই ভাই চার বোনের মধ্যে মেজ সুফিয়া। তিন বছর ধরে প্রবাসী হাবিবুর রহমান হাবিবের বাসায় কাজ করেন। হাবিরের স্ত্রী আলেয়া বেগম বেতন ঠিক মতো দিতেন না। কাজকর্ম নিয়ে মাঝে মধ্যেই সুফিয়াকে নির্যাতন করতেন।
ঈদের ছুটিতেও বাড়ি যেতে দেননি। কাউকে কিছু না জানিয়ে গতকাল রোববার সন্ধ্যার পর আলেয়ার লাশ দিতে আসেন। স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে বলে প্রচার করেন তিনি। আর রাতেই কয়েকজন মাতবর নিয়ে গোপন সমঝোতায় তড়িঘড়ি করে লাশ দাফনের প্রক্রিয়া করা হচ্ছিল।
এ সময় লাশের শরীরের আঘাতের চিহ্ন দেখে হত্যা করা হয়েছে বলে স্থানীয়দের সন্দেহ হয়। এরপর তারা লাশ দাফনে বাধা দিয়ে পুলিশে খবর দেয়।
বড়জোলা গ্রামের বাসিন্দা শরিফুল ইসলাম জানান, লাশের মাথায় দুইটি কোপের দাগ ও গিরায় ব্যান্ডেজ আছে। সারা শরীর অ্যাসিডে ঝলসানোর মতো মনে হচ্ছে। আর লাশে পচন ধরে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে ধারণা করা হচ্ছে দুই তিন দিন আগেই নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
সুফিয়ার বাবা রহিম মল্লিক বলেন, ‘লোকজন বলছে মেরে ফেলা হয়েছে। আমি স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি। তারা একটা ব্যবস্থা করে দেবেন।’
স্থানীয় ইউপি সদস্য হালিম আলী মৃধা জানান, সুফিয়াকে হত্যা করা হয়েছে কি না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তারপরও বিষয়টি নিয়ে বসে পুলিশী ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
তবে আলেয়া বেগম দাবি করেন, ‘সুফিয়াকে হত্যা করা হয়নি। বেতনের তিন হাজার টাকা তাঁর বাবাকে দেওয়ায় তিনি নিজের শরীরে গরম পানি ঢেলে দিয়েছিলেন। এ থেকেই গতকাল রোববার সকালে তাঁর মৃত্যু হতে পারে।’
এ ব্যাপারে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুনীল কর্মকার জানান, ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। আর গৃহকর্ত্রী আলেয়া বেগমকে আটক করে ঘটিত এলাকা সংশ্লিষ্ট আশুলিয়া থানায় হস্তান্তর করা হচ্ছে। ওই থানায় গৃহপরিচারিকার বাবা হত্যা মামলা দায়ের করছেন বলেও জানান ওসি।